সময়ের জনমাধ্যম

আফগান বধে টাইগারদের দুরন্ত সূচনা

ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ছয় উইকেটের বড় জয় দিয়ে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে টাইগাররা। এ মাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয় সাকিব বাহিনী। ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব-মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে মাত্র ৩৭.২ ওভারেই ১৫৬ গুটিয়ে যায় আফগানরা। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শান্ত-মিরাজের অনবদ্য জুটিতে সহজেই জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

শনিবার আফগানিস্তানের দেয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকে দেখে-শুনে খেলছিলেন দুই ওপেনার লিটন দাস-তানজিদ তামিম। কিন্তু পঞ্চম ওভারেই ঘটে বিপত্তি! ফজল হক ফারুকির বল কাভারে ঠেলে রান নেয়ার জন্য সামনের পায়ে একটু ঝুঁকেছিলেন লিটন। রান নেয়ার চেষ্টা করেননি তিনি। তবে অন্য প্রান্ত থেকে লিটনের কল না শুনেই তামিম ততক্ষণে দৌড়ে উইকেটের মাঝে চলে এসেছিলেন। নজিবুল্লাহ জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন জুনিয়র তামিম। তামিমকে হারানোর কিছুক্ষণ পর বিদায় নিয়েছেন লিটনও। ১৮ বলে ১৩ রান করা ডানহাতি এই ওপেনার ফজল হকের বলে বোল্ড হন। চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে চাপ সামলাতে কার্যকর এক জুটি গড়ে তোলেন মেহেদী মিরাজ ও নাজমুল শান্ত।

দুই দফা জীবন পেয়ে ফিফটি হাঁকানো মিরাজ থামলেন অবশেষে। নাভিন উল হককে মিড অফের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু সেখানে দারুণভাবে ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন রহমত শাহ। সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৭৩ বলে ৫৭ রান। তবে আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের জয় এক রকম নিশ্চিত করেই গেছেন তিনি। এশিয়া কাপে আফগানদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি, একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ম্যাচে ফিফটি। আফগানিস্তান যেন মেহেদী হাসান মিরাজের প্রিয় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে দিন দিন।

এর আগে আফগানিস্তানের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ম্যাচের শুরু থেকেই হাত খুলে ব্যাট করতে থাকেন এ দুই ওপেনার। এ জুটির ব্যাট থেকে আসে ৪৭ রান। তবে বিপজ্জনক হয়ে উঠার আগেই টাইগার শিবিরে ভয় ধরানো এ জুটিতে ভাঙ্গন ধরান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ম্যাচের ৯ম ওভারের সাকিবের আউটসাইড অফের বলটি সুইপ করতে গিয়ে তামিমের তালুবন্দী হন জাদরান। আউট হওয়ার আগে ২২ রান করেন এ ব্যাটার। এরপর উইকেটে আসেন রহমত শাহ। কিন্তু উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই সাকিবের বলে লিটনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। রহমতের বিদায়ে উইকেটে আসেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদী। তবে উইকেটে ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। মিরাজের বলে হৃদয়কে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩৮ বলে ১৮ করেন তিনি। শাহিদীর পরপরই সাজঘরে ফেরেন আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। মুস্তাফিজের বলে তামিমের তালুবন্দী হওয়ার আগে ৪৭ করেন এ ডানহাতি ব্যাটার।

এরপর সাজঘরে ফিরে যান নাজিবউল্লাহ জাদরান (৫)। তাকে ফিরিয়ে ম্যাচে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে আফগানরা। চাপ সামলে দলীয় ইনিংস লম্বা করার চেষ্টা করেন নবী। কিন্তু উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই তাসকিনের লেংথ বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনিও তিনি।

এরপর উইকেটে শুধু আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন আফগান ব্যাটাররা। এ ম্যাচে ছয় ব্যাটার দুই অংকের ঘরই স্পর্শ করতে পারেনি। শেষের দিকে ওমরজাই কিছুটা আশা জাগালেও মাত্র ২২ রানেই শরিফুলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি।

এদিন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট শিকার করেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এছাড়া শরিফুল দুটি, তাসকিন ও মোস্তাফিজ একটি করে উইকেট শিকার করেছেন। ব্যাট হাতে ৭৩ বলে ৫৭ রান এবং বল হাতে ২৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা মেহেদী হাসান মিরাজ।