সময়ের জনমাধ্যম

সামি-কোহলির দাপটে বিশ্বকাপ থেকে নিউজিল্যান্ডের বিদায়

পেসার মোহাম্মদ সামি আর ভারতীয় কাপ্তান কোহলির কাছেই হেরে গেছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপের প্রথম সেমি ফাইনালে ৭০ রানে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে ভারত। পেসার মোহাম্মদ সামি একাই গুড়িয়ে দিয়েছেন কিউইদের ব্যাটিং লাইন, তিনি একাই সাত কিউই ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়েছেন। ব্যাটিংয়ে কোহলির ঐতিহাসিক শতরানের দিনে বড় জয় নিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করে কোহলি ও আইয়ারের সেঞ্চুরিতে ভর করে কিউইদের সামনে ৩৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ভারত। জবাবে ৪৮.৫ ওভারে ৩২৭ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা।

ভারতের ৩৯৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে সুবিধা করতে পারেনি কিউইরা। শামির জোড়া আঘাতে ৩৯ রানের মধ্যেই ফিরে যান দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র। দুজনই কাটা পড়েন আনলাকি থার্টিনে।

এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন কিউই দলপতি কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেল। ৭.৪ ওভারে ৩৯ রানে দুই উইকেট হারানো কিউইদের ১৮১ রানের জুটিতে খেলায় রাখেন এ দুই ব্যাটার। এই জুটি ভাঙতে যখন হাপিত্যেশ অবস্থা ভারতীয় বোলারদের তখন আবারও ত্রাতার ভূমিকায় মোহাম্মদ সামি। ৩৩তম ওভারে আরও দুই উইকেট তুলে নেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই পেসার। ৭৩ বলে ৬৯ রান করা উইলিয়ামসনকে ফেরানোর পর রানের খাতা খোলার আগেই টম ল্যাথামকে ফেলেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি কিউইরা। মিচেল একপ্রান্ত আগলে রেখে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৩৪ রান করলেও দলকে জেতাতে তা যথেষ্ট ছিল না। শেষদিকে গ্লেন ফিলিপসের ৩৩ বলে ৪১ রানের ক্যামিও দলের হারের ব্যবধানই কমিয়েছে শুধু।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ওয়াংখেড়ের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে রহিত এবং শুভমান গিলের ৫০ বলে ৭১ রানের জুটিতে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। দলীয় ৭১ রানে ২৯ বলে ৪৭ রান করে অধিনায়ক রোহিত সাজঘরে ফিরলে ক্রিজে আসেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বিরাট কোহলি। এরপর কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে কিউই বোলারদের শাসন করছিলেন গিল। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফেরত যাওয়ার আগে ৬৫ বলে ৭৯ রান করেন এই ব্যাটার।

গিলের বিদায়ের পরও কমেনি ভারতীয়দের আগ্রাসন। ভারতীয় দুই টপ অর্ডার ব্যাটারের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের বোলাররা কোনও সুযোগই তৈরি করতে পারছিলেন না। জুটি ভাঙতে ক্রমাগত বোলার পরিবর্তন করে গেছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইিয়ামসন। তার কোনও পরিকল্পনাই কাজ করছিল না এই জুটির বিরুদ্ধে। ইনিংসের ৪২তম ওভারে সচিনের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান কোহলি। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫০তম সেঞ্চুরি।

১১৩ বলে ১১৭ রান করে টিম সাউদির বলে কোহলি যখন সাজঘরে ফিরেন তখন ভারতের দলীয় সংগ্রহ ৪৪তম ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩২৭ রান। শেষ দিকে আইয়ারের ৭০ বলে ১০৫ রানের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় গড়ে টিম ইন্ডিয়া।

নির্ধারিত ৫০ ওভারে কোহলি ও আইয়ারের জোড়া শতকে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রানের বিশাল পুঁজি পায় ভারত। ১০ ওভারে ১০০ রান খরচায় কিউইদের হয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন টিম সাউদি। ভারতের হয়ে ৫৭ রানে ৭ উইকেট শিকার করে ম্যাচসেরা সামি।

চলতি আসরে টানা ১০ জয়ে অপরাজিত দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছে ভারত। আগামী ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচের জয়ী দলের বিরুদ্ধে ফাইনালে লড়বে রোহিতের দল।

গেল দুই আসরেই সেমি ফাইনালে নেই ভারত। এর আগে ২০১১ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের দশম আসরে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে শেষবার বিশ্বকাপ জয় করে ভারত।