সময়ের জনমাধ্যম

কিউইদের মাঠে টাইগারদের প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়

অবশেষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কাঙ্ক্ষিত জয় পেল বাংলাদেশ। এর আগে নিজিল্যান্ডের মাটিতে খেলা ৯ ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছিল টাইগাররা। দশম ম্যাচে এসে কিউই দুর্গ জয় করে ইতিহাস গড়লো টাইগার বাহিনী।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) নেপিয়ারে ম্যাকলিন পার্ক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানের বেশি স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারেনি কিউই ব্যাটিং লাইনআপ। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেন জিমি নিশাম। বাংলাদেশের হয়ে ২৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। জবাবে খেলতে নেমে ১৮ ওভার ৪ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগাররা।

নিউজিল্যান্ডের মাঠে এবারই প্রথম ওয়ানডে জিতেছিল বাংলাদেশ। এর আগে লাল বলের ক্রিকেটে কিউইদের হারালেও এই সফরের আগে সাদা বলে ২৭ ম্যাচ খেলে জয়শূন্য ছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এই জয়ে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও কাটল জয় খরা।

কিউইদের দেওয়া ১৩৫ রান তাড়া ব্যাট করতে নেমে ভালভাবেই শুরুর আভাস দেন রনি তালুকদার। টিম সাউদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করেন টাইগার ওপেনার। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। অ্যাডাম মিলনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তুলে দেন সহজ ক্যাচ।

এরপর পুল শটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের ইনিংস শুরু করেন টাইগার দলপতি শান্ত। তার ব্যাট থেকে বাউন্ডারি আসে আরও তিনটি। উড়তে থাকা শান্ত আচমকা ধসে পড়েন। জিমি নিশামের এক শর্ট বলে টাইমিংয়ে গড়বড় ক্যাচ তুলে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। ৩৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

চারে নেমে ইশ সোধিকে সুইপে ছক্কা, রিভার্স সুইপে চারে শুরু করেন সৌম্য সরকার। বলের গুণ বিচার করে ভালই খেলছিলেন। তবে বেন সিয়ার্সের বলে ফ্লিকে দারুণ চার মারার পর পরের বলেও বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। একটু জোরের উপর আসা দারুণ ডেলিভারিতে সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ সোম্য ফিরেন ১৫ বলে ২২ রান করে। লিটনের সঙ্গে ভাঙে ২২ বলে ২৯ রানের জুটি।

তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে এরপর আরেক জুটি পান লিটন। হৃদয় ছিলেন তুলনামূলক আগ্রাসী। সিয়ার্সকে উড়িয়ে মারা ছক্কায় দারুন শুরু করা তরুণ এই ব্যাটার ছিলেন সাবলীল। সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগুচ্ছিলএই জুটি। বলের সাথে তাল মিইয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখছিলেন দুজন। ২৯ বলে ২৯ তুলা এই জুটি ভাঙেন স্যান্টনার। কিউই অধিনায়কের বলে খানিকটা এগিয়ে পুশ করতে গিয়ে কাভারে ধরা দেন ১৮ বলে ১৯ করা হৃদয়।

ছয়ে নেমে আবারো ব্যর্থ আফিফ হোসেন ধ্রুব। কয়েকটি ডট বল খেলে চাপ নিতে পারলেন না। ৬ বলে ১ রান করে টিম সাউদির শর্ট বলে তালগোল পাকানো শট খেলে ক্যাচ তুলে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি।

এরপর এই ম্যাচে দুর্দান্ত বল করা শেখ মেহেদীকে নিয়ে জুটি গড়েন লিটন। একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে বাংলাদেশকে টানেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ২৫ বলে ৪০ রানে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ শেষ করেন আসেন লিটন-মেহেদী।

এর আগে টস জিতে বোলিং করতে নেমে দারুণ শুরু এনে দেয় টাইগার বোলাররা। ১ রানেই নিউজিল্যান্ডের টপ তিন ব্যাটারকে তুলে নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই সেইফারের উইকেট তুলে নেন মেহেদী। দ্বিতীয় ওভারে শরিফুলের জোড়া শিকারে ব্যাকফুটে চলে যায় কিউইরা।

২০ রানে ৪ আর ৫০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা কিউই ইনিংস কিছুটা আলোর দেখা পে জিমি নিশামের কল্যাণে। অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে ৩১ বলে ৪১ রানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ের জায়গায় রাখেন তিনি। ২৯ বলে ৪৮ করে ১৭তম ওভারে তিনি ফিরলে ১৩৪ রানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে কিউই ইনিংস।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। ১৬ বলে ১৯ রানের অপরাজিত ইনিংস এবং ১৪ রানে ২ উইকেট শিকারে ম্যাচসেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান।