সময়ের জনমাধ্যম

ইসরায়েলের অবরোধে ভেঙে পড়েছে গাজার চিকিৎসা ব্যবস্থা

Palestinian-Irish plastic surgeon Ahmed El Mokhallalati checks a Palestinian man wounded in an Israeli strike, at the European Hospital, in Khan Younis in the southern Gaza Strip January 31, 2024. REUTERS/Arafat Barbakh

ভেঙে পড়েছে গাজার চিকিৎসা ব্যবস্থা। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ পৌঁছানো যাচ্ছেনা সেখানে। ফলে গাজায় আহত ও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

গাজার শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হলেও পাচ্ছে না ওষুধ। ইসরায়েল বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখায় বিভিন্ন হাসপাতালে কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এরইমধ্যে সেখানে পোলিওসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে গাজার মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

বিশ্বব্যাপী কাজ করা চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের (এমএসএফ) জরুরি বিভাগের সমন্বয়ক মিরিয়াম লারৌসি আলজাজিরাকে বলেন, প্রতিদিনই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এতে লোকজন স্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিকঠাক করতে যুদ্ধবিরতির কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, গাজার অন্তত ১০ হাজার মানুষকে জরুরি 
ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুক্রবার জানিয়েছে, গাজায় জরুরি ওষুধের মজুত একেবারেই নেই বললেই চলে। এতে বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ অস্ত্রোপচার করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তা রিক পিপারকর্ন বলেন, ‘আমাদের প্রধান তিন জরুরি উপাত্ত– অ্যান্টিবায়োটিক, আইভি ফ্লুইড ও ব্যাগের রক্ত নেই। গত ২ মার্চ ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
এ অবস্থায় গাজায় অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। শুক্রবার দক্ষিণ গাজায় অন্তত ১০ জন নিহত হন। এদের মধ্যে সাতজন শিশু রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি হামলা হচ্ছে গাজার উত্তরাংশে। সেখানে গাজা সিটি থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল।

গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, হামলায় নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন করে গাজার আবাসিক ভবন ও বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে ২২৪টি হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে ৩৬টিতে প্রাণ গেছে কেবল নারী ও শিশুদের।

এদিকে, মিডলইস্ট মনিটর শুক্রবার জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে একটি চিঠিতে সই করে রোষানলে পড়েছেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ও প্রায় এক হাজার রিজার্ভ সেনা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তাদের বরখাস্ত করেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ইয়াল জামির। সপ্তাহের শুরুতে গাজায় সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর সেনারা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখেন।

চিফ অব স্টাফ জামির বলেন, সেনাসদস্যরা এ ধরনের কোনো চিঠিতে সই করে আবার চাকরিতে ফিরতে পারেন না। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।