সময়ের জনমাধ্যম

ইএফএলে নতুন পজিশনেও ম্যাজিক দেখালেন হামজা

টানা তিন পরাজয়ে প্রমোশনের স্বপ্ন ক্রমশ ফিকে হয়ে আসছিল শেফিল্ড ইউনাইটেডের। শুক্রবার রাতে কার্ডিফ সিটির বিরুদ্ধে তাই জয়ের বিকল্প ছিলনা দ্য ব্লেডসদের। দলের এই কঠিন সময়ে নতুন ভূমিকায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন হামজা চৌধুরী।

সাধারণত মাঝমাঠে খেললেও এই ম্যাচে রাইট-ব্যাক পজিশনে দেখা গেছে বাংলাদেশি মিডফিল্ডারকে। নতুন গেমপ্ল্যান কার্যকর করতে শেফিল্ড কোচ জ্যাক ওয়াইল্ডার তাকে নতুন পজিশনে খেলালেও তিনি ছিলেন খুবই কার্যকর, দেখিয়েছেন অসাধারণ লড়াকু মানসিকতা। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে কার্ডিফকে হারিয়ে মূল্যবান তিন পয়েন্ট ঘরে তুলেছে শেফিল্ড ইউনাইটেড। ফলে প্রিমিয়ার লিগে প্রমোশনের আশা এখনো টিকে রইল দলটির।

মাঝমাঠে খেলতে অভ্যস্ত হামজা রক্ষণভাগে আত্মবিশ্বাসের সাথে খেললেন যেন এই পজিশনে দীর্ঘিদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। পুরো ৯০ মিনিটে ৪টি ট্যাকল, চারটি ক্লিয়ারেন্স, গোলমুখে একটি শট ব্লক এবং দুটি ইন্টারসেপশন করেন তিনি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- পুরো ম্যাচে একবারের জন্যও প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়াড় তাকে বল পায়ে পরাস্ত করতে পারেনি। ৮২ শতাংশ সফল পাসই বলে দেয় বল পায়েও ছিলেন আত্মবিশ্বাসী।

ম্যাচের শুরু থেকে হামজা ছিলেন সজাগ। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের রুখে দেওয়ার পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে আক্রমণেও সাহায্য করতে দেখা যায় তাকে। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে গুস্তাভো হামেরের গোলে এগিয়ে যায় শেফিল্ড।  বিরতির ঠিক আগে হামেরের একটি ফ্রি-কিক গোল বারে প্রতিহত না হলে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো।

বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে শেফিল্ড যখন যখন ১-০ গোলে এগিয়ে কার্ডিফ মিডফিল্ডার আলভেস যখন বিপজ্জনকভাবে গোলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন মুহূর্তের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখুঁত স্লাইডিং ট্যাকলে বল ক্লিয়ার করেন হামজা। ঘরের মাঠের দর্শকরাও তার এই ট্যাকলে ফেটে পড়েন উল্লাসে। এটা শুধু একটা ট্যাকল ছিল না, এটা ছিল একটা বার্তা – যে নতুন পজিশনে খেলেও দলের প্রয়োজনে তিনি কতটা নির্ভরযোগ্য হতে পারেন।

দ্বিতীয়ার্ধে ও’ডাউডাকে ফাউল করার জন্য হলুদ কার্ড দেখেন হামজা, কিন্তু তাতেও খেলায় কোনো প্রভাব পড়েনি। এরপরও রক্ষণভাগে আগের মতই দূর্গ হয়ে ছিলেন। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে বেন ব্রেরটন ডিয়াজের অসাধারণ ফিনিশিংয়ে ২-০ গোলের জয় নিশ্চিত হয় শেফিল্ডের।

হামজার পারফরম্যান্স এবং উদ্যম পুরো ম্যাচে ছিল চোখে পড়ার মতো। ডান প্রান্তে তার আধিপত্য প্রতিপক্ষকে পুরো ম্যাচ জুড়েই চাপে রেখেছে। রক্ষণে অবিচল থেকে এবং ডান প্রান্তে দ্রুত আক্রমণে গিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগও তৈরি করেছেন। নতুন পজিশনে এমন পারফরম্যান্সে দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় হিসেবে নিজের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করলেন হামজা।