সময়ের জনমাধ্যম

আদালত, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আদালত, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের কর্মসূচি বানচাল করার জন্য। জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সরকার শেষ অস্ত্র হিসেবে আদালতকে ব্যবহার করছে এক অমানবিক দমনের যন্ত্র হিসেবে।

লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মীরা এখন আজ্ঞাবহ আদালতের কোপানলে সাজার শিকার হচ্ছেন। এর প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে—গত দুইবারের মতো বিনা ভোটে নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার চূড়ান্ত মরণকামড়। সুষ্ঠু ভোটের প্রতি সরকারের এক ধরনের ক্রোধ থেকে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে হিংস্র প্রতিশোধ। যারাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দাবি করছেন, তারাই বর্তমান সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। এখন এসব প্রতিহিংসা পূরণ করা হচ্ছে আদালতকে দিয়ে।’

রিজভী বলেন, ‘এ দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির মূল প্রতিপাদ্য ছিল গণতন্ত্র। কিন্তু, বহুদলীয় গণতন্ত্রের কথা শুনলেই সরকার অস্থির হয়ে পড়ে। তাই, স্বৈরাচারের উগ্রমূর্তির প্রতিফলনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ক্ষত-বিক্ষত। আইন, বিচার, আদালত, প্রশাসন, পুলিশ সবকিছুই একাট্টা হয়ে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলোর ওপর সর্বগ্রাসী আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার হিংসার পথে গণতন্ত্রের পক্ষের মজলুম নেতাদের নতজানু করতে না পেরে এখন আদালতকে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে সাজা দেওয়ার হিড়িক শুরু করেছে।’

শেখ হাসিনা সরকার জাতির দুর্দিনের প্রতীক মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাই তারা গোটা জাতির ওপর দুঃসময় নামিয়ে এনেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার সদিচ্ছাপ্রসূত কোনও কাজই করেননি। অশান্তি, হিংসা, সংঘাত ও হানাহানি করে, জনগণকে দূরে ঠেলে, অবৈধ ক্ষমতাকে নিরাপদ করার চেষ্টায় রত আছে। বর্তমান আওয়ামী সরকার ফ্যাসিবাদের বাংলাদেশি সংস্করণ।

দেশ এখন চরম সঙ্কটে, দাবি করে তিনি বলেন, সারাদেশ এখন ডেঙ্গু জ্বরে কাঁপছে। ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে মৃত্যুর সংবাদই এখন প্রধান সংবাদ। এরইমধ্যে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ভর্তি ও সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে। প্রতিদিন ১২-১৫ জন মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে সারাদেশে শুধু ডেঙ্গুতে সাড়ে ছয় শতাধিক লোক মারা গেছে। অবৈধ সরকারের উদাসীনতা, দুর্নীতি ও অবহেলার কারণে এই রোগ এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে রাজপথে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক জোট দলগুলো যুগপৎ ধারায় ঐক্যবদ্ধ বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা ও সফল করার লক্ষ্যে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীতে গণমিছিল করা হবে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে ৯ সেপ্টেম্বরের গণমিছিল কর্মসূচি সফল করার জন্য অনুরোধ করা হলো।