যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ঠিক আগে দেশটির অন্যতম গোপন স্থাপনা ফোরদো ফুয়েল এনরিচমেন্ট সাইটে ব্যতিক্রমধর্মী তৎপরতা ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তেহরান কি আগেই হামলার পরিকল্পনার খবর পেয়েছিল?
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্যাটেলাইট ইমেজিং সংস্থা ম্যাক্সার টেকনোলোজিস (Maxar Technologies) গত ১৯ ও ২০ জুনের দুটি উচ্চমানের উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ফোরদোর প্রবেশপথ ও টানেলের মুখে অস্বাভাবিক মাত্রায় যানবাহনের উপস্থিতি। অন্তত ১৬টি মালবাহী ট্রাক সাইটের অ্যাক্সেস রোড বরাবর সারিবদ্ধভাবে অবস্থান করছে, যেগুলোর গন্তব্য ছিল সরাসরি টানেলের প্রবেশপথের দিকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই এসব ট্রাক প্রবেশপথ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ সরিয়ে নেওয়া বা রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমের ইঙ্গিত হতে পারে। চিত্রে বুলডোজার, অতিরিক্ত যানবাহন এবং ট্রান্সপোর্ট ট্রেইলারও দেখা গেছে, যা প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এই কর্মকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কয়েক দিন আগেই সংঘটিত হয়, যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে, তেহরান স্যাটেলাইট নজরদারি কিংবা গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে ঝুঁকি আঁচ করতে পেরেছিল।
অনেক বিশেষজ্ঞ দাবি করছেন, হামলার স্পষ্ট পূর্বাভাস পেয়েছিল ইরান এবং সেই অনুযায়ী ফোরদোতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি, ফাইল বা ইউরেনিয়াম সংশ্লিষ্ট উপকরণ আগে থেকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলে।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, তারা ফোরদোসহ ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনায় সফল হামলা চালিয়ে দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতাকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। তবে ইরান পাল্টা দাবি করেছে, এসব স্থাপনা অনেক আগেই খালি করে ফেলা হয়েছিল। ফলে হামলায় উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
উপগ্রহ চিত্রে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইরান হয়তো হামলার প্রস্তুতি আগেই বুঝতে পেরেছিল এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপও নিয়েছিল। বিশ্লেষকদের মতে, এতে করে দেশটি বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পেরেছে।