সময়ের জনমাধ্যম

শেখ হাসিনাই বিনির্মাণ করবেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’

স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম বলতে যাদের বোঝায় তারা দ্বিধাবিভক্ত। প্রথমত যাঁরা দেশ স্বাধীন করেছেন সেই মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। যে লক্ষ্য বঙ্গবন্ধুই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন সাত মার্চের ভাষণে “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এ ঘোষণাতে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য কী ছিল তা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত একটা গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন, কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।

দেশ স্বাধীন হবার পরে মাত্র সাড়ে তিন বছরে একটা বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যান। ধ্বংসস্তূপের ওপর গড়ে তোলেন সোনার বাংলার কাঠামো। কিন্তু স্বাধীনতার শত্রুরা তাকে সেই সময় দেয়নি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা পাকিস্তানী ধারায় দেশ পরিচালনা শুরু করে। এর পেছেনর কুশীলব মোশতাককে বলা হলেও প্রকৃত কুশীলব জেনারেল জিয়া।

তার সময়ে যারা নতুন প্রজন্ম হিসেবে বেরিয়ে এসেছেন তারা টিভির পর্দা, পত্রিকা সব জায়গায় দেখেছেন শুধুই জিয়াকে। সেই সময়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে করা হয়েছে চরম মিথ্যাচার। বলা হতো তিনিই গণতন্ত্রের হত্যাকারী, ক্ষমতালোভী এবং যা কিছু করেছেন তা নিজের স্বার্থে। দেশ ও গণতন্ত্রকে তিনি ধ্বংস করে গেছেন। সেই সময়ের প্রজন্মের লোকেরা জিয়া ছাড়া আর কাউকে চিনতো না। যিনি ২৩ বছর সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করলেন, ১৪ বছর কারাগারে কাটালেন তার পরিচিতি ঘটানো হলো দেশদ্রোহী, গণতন্ত্র হত্যাকারী ও ইসলামবিরোধী হিসাবে। কী নির্মম পরিহাস!

আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন এখন যারা বিএনপি করেন এবং যাদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ তাদের সকলেই আওয়ামী লীগ বিরোধী, বঙ্গবন্ধু বিরোধী এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী। যে দর্শনে জিয়া তাদের উদ্বুদ্ধ করেছিলেন লুটেপুটে খাও, আমার দল করো আর আমাকে সমর্থন করো, জামাত-শিবিরের সাথে আঁতাত করো, এই হল জিয়ার প্রজন্মের লোক। তারা বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী ছিল না। তারাই এখনো বড় বড় শিল্পপতি বিদেশে অর্থ পাচার করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। এদের দ্বারা দেশ ও জাতির উন্নয়ন সম্ভব কি? এ কথা সত্য আওয়ামী লীগের কিছু লোক ক্ষমতার লোভে জিয়াকে সমর্থন করেছিল। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চার নীতিকে ধ্বংস করেছেন, সংবিধানকে সাম্প্রদায়িক করেছেন এবং তার সময়ের প্রজন্ম তার রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।

এর পর আসলেন জেনারেল এরশাদ তিনি একই ধারায় দেশ পরিচালনা শুরু করলেন। তিনি একধাপ এগিয়ে গিয়ে রাষ্ট্রের জন্য একটা ধর্ম নির্ধারণ করলেন। এরশাদের আমলে অনেক লোক জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে। তখন এরশাদ এর আদর্শও ছিল জিয়ার মতোই অর্থাৎ লুটেপুটে খাওয়া এবং তাকে সমর্থন জানানো।

এর পর আসলেন তৃতীয় প্রজন্মের লোকেরা। শেখ হাসিনা শাসক নয় দেশের সেবক হয়ে, দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার দ্বারা দেশ পরিচালনা করে গোটা বিশ্বে এক উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন। তার প্রথম লক্ষ্য হলো মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের ধারায় এদেশকে ফিরিয়ে আনা। তার সময়ে বঙ্গবন্ধু ও তার দল এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জনসাধারণ জানতে পেরেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও লক্ষ্য সামনে রেখে তিনি তাঁর পিতার মতো সোনার বাংলা গড়ার উদ্যোগ নেন। তার আমলের প্রজন্মরা সত্যটা উপলব্ধি করতে পারেন এবং যেভাবে শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাতে তারা সমর্থন জানাচ্ছেন। শেখ হাসিনা তাদের শিখিয়েছেন কীভাবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হয়, কীভাবে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া যায়, সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে কীভাবে সাধারণ মানুষের জীবনে তার সুফল বয়ে এনে তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে অবদান রাখা যায়। তিনি নতুন প্রজন্ম বা দেশের মানুষকে শুধু স্বপ্ন দেখাননি কীভাবে স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন করতে হয় সেটাও অর্জন করে দেখিয়েছেন।

তিনি শুধু তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যই দেননি, হাতে কলমে প্রমাণ করেছেন যে, একটা দলের যদি রাজনৈতিক দর্শন থাকে, দেশপ্রেম থাকে এবং জাতিকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায় তাহলে দেশ গড়া কঠিন কাজ নয়। উন্নয়নের কথা চিন্তা করলে শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের বিস্ময়। তিনি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সকল ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, রূপকল্প ঘোষণা করেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার।

বছরের প্রথম দিনে ৩৫ কোটি বই বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এমন দেশ কি কোথাও আছে যেখানে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ে গুদামে গচ্ছিত ২০ লক্ষ টন খাদ্যের মধ্যে ১৪ লক্ষ টন খাদ্য অসহায় মানুষের মাঝে বন্টন করে দেয়া হয়েছে। শুধু উৎপাদন এবং উন্নয়ন নয় আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায়ও শেখ হাসিনা অসামান্য অবদান রেখেছেন। দেশের অভ্যন্তরে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা বলে কিছু ছিল না সেখানে নিয়মিত নির্বাচন আয়োজন করে সরকার পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আজ বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের হাতে মোবাইল, ঘরে ঘরে ইন্টারনেট। এর সবকিছু শেখ হাসিনার অবদান। তাই তার আমলে যে প্রজন্ম গড়ে উঠেছে তারা জানতে পেরেছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের কথা আর দেখেছে শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে দেশ পরিচালনা। তারা দেখেছে কীভাবে তিনি নিরলস পরিশ্রম করে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছে দিয়েছেন। সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমান প্রজন্ম শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করছেন।

বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এটা একটা মহা গৌরবের বিষয়। শেখ হাসিনা যা করেছেন বঙ্গবন্ধুর পর আর কোন শাসক তার ধারেকাছেও যেতে পারেননি। শেখ হাসিনা তার দল নিয়ে সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দেশ পরিচালনা করছেন। তাই তিনি দেশরত্ন। যদিও তিনি একজন সাহিত্যের ছাত্রী তার মতো একজন বিজ্ঞানমনষ্ক নেত্রী বিশ্বে আজ বিরল। সত্যিকার অর্থে তিনি তার পিতার আদর্শ ধারণ করে তার দেখানো পথেই দেশকে পরিচালনা করে চলেছেন। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি শেখ হাসিনার দর্শন। বাংলাদেশে যা কিছু নতুন তা শেখ হাসিনার সৃষ্টি। তাই বর্তমান প্রজন্মের উচিৎ শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করা, সাহস ও সততার সাথে এগিয়ে যাওয়া। যতদিন শেখ হাসিনা জীবিত আছেন তার বিকল্প নেতৃত্ব নেই। যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে বাংলাদেশ ততদিন নিরাপদে এবং সঠিক পথে থাকবে বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্মের উচিৎ ভবিষ্যতের জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে শেখ হাসিনাকে আকন্ঠ সমর্থন জানানো এবং তার দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

  • * * * Apple iPhone 15 Free: http://ayushmaanpharma.com/uploads/go.php * * * hs=bda33939059dc762611bc51a55aab38c* says:

    dp22po

leave a reply