টানা তিন বছরের চলমান যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা হলো তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। এর কয়েক ঘন্টা পর ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাংশের সুমি অঞ্চলে বেসামরিক একটি বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলা করেছে। এতে নিহত হয়েছেন নয়জন, আহত হয়েছেন আরও চারজন। শনিবার ইউক্রেনের কর্মকর্তারা হতাহতের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টেলিগ্রামে ইউক্রেনের ন্যাশনাল পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ‘এটি শুধুই আরেকটি গোলাবর্ষণ নয়, এটি একটি ঠান্ডা মাথার যুদ্ধাপরাধ।’
সুমি অঞ্চলের সামরিক প্রশাসনের প্রধান ইহোর তকাচেঙ্কো টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন, ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে। ইউক্রেনের ন্যাশনাল পুলিশ টেলিগ্রামে একটি গাঢ় নীল রঙের যাত্রীবাহী গাড়ির ছবি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, গাড়িটি প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এর ছাদ উড়ে গেছে এবং জানালাগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পড়েছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বলেছে, রুশ বাহিনী সুমি অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করার একটি স্থানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহকারী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি। আর ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন রুস্তেম উমেরভ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তা বন্ধ করাই ছিল এই বৈঠকের লক্ষ্য।
দুই ঘণ্টার কম সময়ের ওই বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। তবে দুই দেশ এক হাজার করে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ে একমত হয়েছে। তবে শান্তি আলোচনা নিয়ে সন্তুোষ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। দেশটি বলেছে, তারা ভবিষ্যতেও যোগাযোগ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত আছে। দুই দেশই বলেছে, তারা শিগগিরই একে অপরের সঙ্গে এক হাজার করে যুদ্ধবন্দী বিনিময়ে সম্মত হয়েছে।
আলোচনা শেষ হওয়ার পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
জেলেনস্কি আরও লিখেছেন, ‘ইউক্রেন প্রকৃত শান্তি আনার জন্য যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখাটা জরুরি। যদি রাশিয়া পূর্ণাঙ্গ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন জেলেনস্কি।