২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি ফের চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। একদিকে সদ্য উত্তরবঙ্গ সফর করে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অন্যদিকে এবার দক্ষিণবঙ্গের মাটিতে পা রেখেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
শনিবার (৩১ মে) রাত ১১টা নাগাদ কলকাতায় এসে পৌঁছান অমিত শাহ। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চ্যাটার্জিসহ একাধিক রাজ্য নেতা।
রোববার (১ জুন) কলকাতার এক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বিজেপির সাংগঠনিক সভা থেকে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন অমিত শাহ। তার অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশিদের জন্য বাংলার সীমান্ত খুলে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তৃণমূল সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে অবৈধ অনুপ্রবেশকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনোই অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে পারবেন না, শুধুমাত্র বিজেপিই তা করতে সক্ষম।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্য সরকার বিএসএফকে প্রয়োজনীয় জমি দেয়নি, ফলে সীমান্তে নজরদারি দুর্বল হয়েছে। এই ভূমিকার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
অমিত শাহ আরও দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেস মুসলিম ভোটব্যাংক তুষ্ট করার রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করেছেন শুধুমাত্র ধর্মীয় ভোট ধরে রাখার জন্য।
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে মমতার বিরোধিতাকে কটাক্ষ করে অমিত শাহ বলেন, “এটি দেশের মা-বোনদের প্রতি অসম্মান।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতোপূর্বে দাবি করেছেন, বিজেপি এই অপারেশন ইস্যুতে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে এবং হিন্দু-নারী আবেগকে কাজে লাগাচ্ছে নির্বাচনী স্বার্থে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই পরপর সফর এবং অনুপ্রবেশ, সীমান্ত ও মুসলিম ভোটব্যাংক ইস্যুতে সরাসরি আক্রমণ, সব মিলিয়ে বিজেপি ২০২৬ নির্বাচনের আগে রাজ্যে একটি কৌশলগত বার্তা দিতে চাইছে। তৃণমূল কংগ্রেস কীভাবে এই অভিযোগের জবাব দেয়, এবং আগামী দিনে এই ইস্যুগুলো ভোটের রাজনীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলে, সেদিকেই এখন নজর পর্যবেক্ষকদের।