সময়ের জনমাধ্যম

কার্বন নির্গমনের জন্য দায়ী দেশেই শুরু কপ-২৮

বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন ও বিশেষজ্ঞদের বিরোধিতার মধ্যেই আজ থেকে দুবাইয়ে শুরু হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এক হচ্ছেন কীভাবে এই জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে বিশ্বকে রক্ষা করা যায়। আর সে লক্ষ্যে নানা ইস্যুতে মিলিত হতে যাচ্ছেন বিশ্বনেতৃবৃন্দ।

দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স ও দুবাই এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান খালেদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান ইতোমধ্যে কপ সম্মেলনস্থল দুবাই এক্সপো সিটি পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেন সম্মেলন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হতে ও আমন্ত্রিত অতিথিদের যেন কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে সম্মেলনস্থল পরিদর্শন করেন। ক্রাউন প্রিন্স অতিথিদের জন্য সরবরাহকৃত সুবিধা ও অন্যান্য বিষয় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে সে বিষয়েও খোঁজ নেন আয়োজনকারীদের কাছ থেকে। 

পরিদর্শনের সময় শেখ খালেদ দুবাইয়ের জনগণকে উচ্ছাস-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে অতিথের আমন্ত্রণ জানানোর আহবান করেন। এ সময় তিনি প্যারিস চুক্তির সফল বাস্তবায়নের দাবিও জানান। 

এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদি টেকসই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে একটি সঠিক নীতি ও কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দৃঢ় ভূমিকা রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান প্রিন্স। বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিরতা আনা দুবাইয়ের টেকসই পরিকল্পনার অংশ বলেও তিনি গণমাধ্যমকে জানান।

এ সময় শেখ খালেদের সঙ্গে দুবাইয়ের শিল্প ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ড. সুলতান আল জাবের, কপ২৮ প্রেসিডেন্ট রিম আল হাশিমি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও এক্সপো সিটি দুবাইয়ের প্রধান নির্বাহী লে: জে: তালাল বেলহুল, দেশটির নিরাপত্তা বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মেদ আব্দুল্লাহ আল জুনাইবিসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে জার্মানির বার্লিনে প্রথম কপ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে কপ-২৮ জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এবারের সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অনেক বিশ্ব নেতাই অংশ নিচ্ছেন না। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ব্রিটেনের রাজা চার্লসসহ বেশিরভাগ রাষ্ট্রপ্রধান সম্মেলনে যোগ দেবেন। সবমিলিয়ে বিশ্বের ১৫০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া চীনসহ অনেক প্রভাবশালী দেশের প্রধান ছাড়া সারা বিশ্বের ত্রিশ হাজারেরও বেশি সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী সংগঠন ও সাংবাদিকরা এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

বরাবরের মতো এবারের সম্মেলনেও বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল থাকছে। ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন। দুবাই সরকারের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে বিশ্বের ১৬০ দেশের মোট ৮৫ হাজার প্রতিনিধিরা অংশ নিবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, জীবাশ্ম জ্বালানি সমূহের মধ্যে অন্যতম জ্বালানি তেল কার্বন নির্গমনের জন্য  সবচেয়ে বেশি দায়ী। এর অন্যতম বড় উৎপাদক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। আর সেই দেশেই শুরু হয়েছে কার্বন নির্গমন কমানো নিয়ে আলোচনা।