সময়ের জনমাধ্যম

ঋণ খেলাপির জামিনদার, মনোনয়নপত্র বাতিল জাহাঙ্গীরের

ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের জামিনদার হয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল হলো গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম রোববার সকালে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘উনি একজন ঋণ খেলাপি হিসেবে আমাদের কাছে তথ্য এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। উনি একজন জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপি।’

রোববার বঙ্গতাজ মিলনায়তনে স্থাপিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাচাই বাছাই শেষে জায়েদা খাতুনসহ নয়জনের মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা, বাতিল করা হয় তিনজনের মনোনয়নপত্র।

যাচাই বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংক কর্মকর্তারাও ঋণ পরিশোধেদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, ওই কোরিয়ান মালিকের পক্ষে ঋণ নিয়েছিলেন আব্দুর রহিম নামের এক ব্যক্তি।

এছাড়া ৩০০ জন সমর্থনকারীর জায়গায় ২৩৯ জনের স্বাক্ষর দিয়ে মনোনয়নয়পত্র জমা দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী অলিউর রহমান এবং যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল করার কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে যাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে তারা আপিল করার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে মনোনয়নপত্র বাতিলের প্রতিক্রিয়ায় জাহাঙ্গীর বলেছেন, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে, পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। ব্যাংকের ইনস্টলমেন্ট জমা দেওয়ার কথা জানিয়ে কর্তৃপক্ষ লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দি দিয়েছে। তারপরও আপনারা যে কাজটি করলেন তাতে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে, আপনারা নিরপেক্ষতার মধ্যে ছিলেন না।’

রিটার্নিং কর্মকর্তার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন জানিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি আশা করি আপনাদের কাজে যেন নিরপেক্ষতা থাকে। সব প্রার্থীর সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ করা হয়।’

তবে মেয়র পদে নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মা জায়দা খাতুনের মনোনয়নপত্রও জমা দেন জাহাঙ্গীর। তার মায়ের মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার ‘নিউটাউন নিটওয়্যার’ নামে একটি কোম্পানি অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা ওয়াসা শাখা থেকে ঋণ নিয়েছিল। এই কোম্পানিতে জাহাঙ্গীরের মালিকানা নেই। তবে তিনি মেয়র পদ থাকার সময় সেই ঋণের জামিনদার হয়েছিলেন।

জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর গত ১১ ও ১৮ এপ্রিল কোরিয়ানরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের যে পাওনা ছিল, তা পরিশোধ করেছে। কোরিয়ান কোম্পনি অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছে। সেই সমস্ত কাগজপত্র আইনজীবী এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়েছে।’

দলের বহিষ্কারাদেশ কাটিয়ে পুনরায় গাজীপুরের মেয়র হওয়ার আশায় মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জাহাঙ্গীর আলম। আলমের প্রার্থিতা যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়ে গেছে। তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিতব্য গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। তার মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পাবেন তিনি।

গতবারের বরখাস্তকৃত মেয়র জাহাঙ্গীর এবারের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের কাছে নৌকা প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন তিনি।