সৌদি-ইয়েমেন সীমান্তে ইথিওপিও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নির্বিচারে হত্যা করছে সৌদির সীমান্তরক্ষী বাহিনী। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ইথিওপিয়া থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টা চালালে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের ওপর ’বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ’ করে। এতে শত শত মানুষ প্রাণ হারান।
![](https://muhurto.news/wp-content/uploads/2023/08/Soudi-Arab-1692642581-1.jpg)
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক নাদিয়া হার্ডম্যান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সৌদি কর্মকর্তারা বহির্বিশ্বের অন্তরালে থাকা দুর্গম সীমান্ত এলাকায় শত শত অভিবাসী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীদের হত্যা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে পেশাদার গলফ ও ফুটবল ক্লাব কেনা ও বড় বড় বিনোদন অনুষ্ঠানের আয়োজনের মাধ্যমে সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উন্নয়নের যে চেষ্টা চলছে, তাতে প্রভাবিত হয়ে এ ধরনের ভয়ানক অপরাধ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়া উচিৎ হবে না।’
![](https://muhurto.news/wp-content/uploads/2023/08/images-35-1.jpeg)
এইচআরডব্লিউ’র প্রতিবেদনে ইয়েমেন সীমান্তের মাধ্যমে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন এমন ৩৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে বলে জানায়। এছাড়াও সংস্থাটি স্যটেলাইট ছবি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া ছবি ও ভিডিও সূত্রের উল্লেখ করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা ২৮টি বিস্ফোরক অস্ত্র সহকারে আক্রমণের বর্ণনা দেন, যার মধ্যে মর্টারের গোলাও রয়েছে।
বেঁচে ফিরে আসা কয়েকজন ইথিওপিও নাগরিক এসব ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন। একজন বলেন, সীমান্তরক্ষীরা তাকে প্রশ্ন করে, ‘শরীরের কোন অঙ্গে গুলি খেতে চাও?’
![](https://muhurto.news/wp-content/uploads/2023/08/Saudi-2308210609.jpg)
প্রায় সব প্রত্যক্ষদর্শীই সাক্ষাৎকারে আতঙ্কজনক সব ঘটনার বর্ণনা দেন। নারী, পুরুষ ও শিশুরা মারাত্মক আহত বা মৃত অবস্থায় সেই পার্বত্য অঞ্চলের মাটিতে থরে-থরে শুয়ে আছেন। অনেকেই এক বা একাধিক অঙ্গ হারিয়েছেন।
ইথিওপিয়ার ওরোমিয়া অঞ্চলের ২০ বছর বয়সী এক নারী জানান, সৌদি রক্ষীবাহিনী একদল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মুক্তি দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তাদের ওপর এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করে।
![](https://muhurto.news/wp-content/uploads/2023/08/images-34.jpeg)
’তারা আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি চালায়। সেই ঘটনা মনে পড়লেই আমি কাঁদি,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমি এক ব্যক্তিকে সাহায্যের জন্য ডাকাডাকি করতে গিয়ে দেখি। সে তার দুটি পা-ই হারিয়েছে। সে চিৎকার করছিল। সে বলছিল, ’আমাকে কি এখানে ছেড়ে যাচ্ছ তোমরা? দয়া করে আমাকে ছেড়ে যেও না।’ কিন্তু আমরা তাকে সাহায্য করতে পারিনি, কারণ আমরা দৌড়ে পালাচ্ছিলাম।”
![](https://muhurto.news/wp-content/uploads/2023/08/images-33-1.jpeg)
সৌদিতে অভিবাসন ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের সহিংস মনোভাব দেখানোর নীতিমালাকে তাৎক্ষণিক ও জরুরি ভিত্তিতে বাতিল ও প্রত্যাহার করার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। জাতিসংঘকে এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।