সময়ের জনমাধ্যম

কারাবন্দি মায়ের নোবেল শান্তি পুরস্কার নিলেন নার্গিসের সন্তানরা

কারাবন্দি মা নার্গিস মোহাম্মদির পক্ষ থেকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করেছে দুই সন্তান। রোববার (১০ডিসেম্বর) নরওয়ের রাজধানী অসলোতে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও অর্থনীতিসহ অন্যান্য নোবেল পুরস্কারের সঙ্গে সম্মানজনক শান্তি পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে বিজয়ীদের হাতে।

কারাবন্দি মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মোহাম্মদির হয়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তাঁর দুই যমজ সন্তান ১৭ বছর বয়সী কিয়ানা ও আলি রহমানি।

এসময় তারা কারাগার থেকে পাঠানো তাদের মায়ের একটি বার্তা পড়ে শোনান। অসলোর সিটি হলে কয়েকশ অতিথির সামনে ফারসি ভাষায় পাঠানো নার্গিসের চিঠিটি পাঠ করেন তারা। নার্গিসের অনুপস্থিতি বোঝাতে সন্তানদের মাঝখানে একটি চেয়ার খালি রাখা ছিল।

বার্তায় ইরানী সরকারের নিন্দা করে তিনি বলেন, “ইরানের জনগণ অধ্যবসায়ের সঙ্গে দমন-পীড়ন ও কর্তৃত্ববাদের জয় করবে। কোনও সন্দেহ নেই, এটা নিশ্চিত।”

ডিফেন্ডার্স অভ দ্য হিউম্যান রাইটস সেন্টার সংস্থার উপপ্রধান নার্গিস বহু বছর ধরেই ইরানের একজন বিশিষ্ট মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব। ২০১০ সাল থেকে কারাগারে বন্দী জীবন পার করছেন ৫১ বছর বয়সের এই নারী। মোট ১৩ বার গ্রেপ্তার, ৫ বার দোষী সাব্যস্ত হন। ২০১৬ সালের মে মাসে তেহরানে ১৬ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। বর্তমানে তিনি ‘অপপ্রচার ছড়ানোর’ দায়ে কারাবন্দি আছেন। সব মিলিয়ে তাঁর কারাদণ্ডের মেয়াদ ৩১ বছর।

তাঁর স্বামী রাজনৈতিক কর্মী তাগি রহমানিও দুই সন্তানের সঙ্গে প্যারিসে নির্বাসিত জীবন পার করছেন। বহু বছর ধরে পরিবারের কারো সাথেও সাক্ষাৎ হয়নি নার্গিসের ।

নার্গিস চিঠিতে লিখেছেন, “আমি একটি কারাগারের উঁচু, ঠাণ্ডা দেয়ালের আড়াল থেকে এই বার্তা লিখছি।” চিঠিতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে গত বছর শুরু হওয়া বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে তরুণ ইরানিদের প্রশংসা করেছেন তিনি।

কারাগার থেকে পাঠানো বার্তায় তিনি বলেন, “প্রতিরোধ জীবন্ত ও সংগ্রাম দুর্বল হয়নি। প্রতিরোধ ও অহিংসা আমাদের সেরা কৌশল- এটি একই কঠিন পথ যেখানে ইরানিরা আজ পর্যন্ত হেঁটেছে, তাঁদের ঐতিহাসিক চেতনা ও তাঁদের সম্মিলিত ইচ্ছার জন্য কৃতজ্ঞতা।”