ঢাকা সফরে আসছেন দুই পাকিস্তানী মন্ত্রী, সম্পর্ক উন্নয়নে সক্রিয় ইসলামাবাদ


বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে প্রায় দেড় দশকের শীতল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে ইসলামাবাদ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২১ ও ২৩ আগস্ট মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন দেশটির দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। ২১ আগস্ট চার দিনের সফরে আসবেন বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান, আর ২৩ আগস্ট দুই দিনের সফরে আসবেন উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই পাকিস্তান দুই দেশের নানা পর্যায়ের আলোচনা সক্রিয় করতে উদ্যোগী হয়। এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকায় এসেছিলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ, যা দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ২৪ আগস্ট একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে গত দেড় দশকে বাংলাদেশে কোনো দ্বিপক্ষীয় সফরের ঘটনা নেই, তাই এই সফর রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই সফরে সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা আউট অব দ্য ওয়ে কিছু করছি না। অন্য অনেক দেশের মতোই আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। যেখানে ব্যবসা, বিনিয়োগের পাশাপাশি মানুষের চলাচল সুগম করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বৈরী সম্পর্কের প্রয়োজন নেই। অতীতে অকারণে পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি। পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক করার সময় অমীমাংসিত তিন বিষয় আলোচনার টেবিলে থাকছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাঙ্গা করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের মধ্যে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের জন্য সমঝোতা স্মারক সইয়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ইসহাক দারের সফরে দুই দেশের কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত মাসে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভির ঢাকা সফরের পর এই চুক্তির খসড়া বিনিময়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব অংশ নিতে ঢাকায় আসতে পারেন। সর্বশেষ জেইসি বৈঠকটি হয়েছিল ২০০৫ সালে।