যুক্তরাষ্ট্র-চীন ৯০ দিনের জন্য শুল্কবিরতি ঘোষণা


বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন, নিজেদের মধ্যে চলমান বাণিজ্য সংঘাত নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। দুই দেশই পরস্পরের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে। এর ফলে আসন্ন ক্রিসমাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ছুটির মৌসুমে মার্কিন খুচরা ব্যবসায়ীরা কম শুল্কে পণ্য আমদানি করার সুযোগ পাবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে জানান, তিনি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এর মাধ্যমে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত থাকবে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পরপরই চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও একই সময়ের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কে পারস্পরিক বাণিজ্য সুবিধার অভাব এবং এর ফলে সৃষ্ট জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা উদ্বেগ মোকাবিলায় চীনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।’
বর্তমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ এবং চীন মার্কিন পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। নতুন সিদ্ধান্তে দুই দেশের মধ্যে শুল্ক ১৪৫ ও ১২৫ শতাংশে পৌঁছানোর আশঙ্কা আপাতত বাতিল হলো।
এই সিদ্ধান্তে বেইজিংয়ে স্বস্তি দেখা গেছে। রোবোটিক্স পেশাজীবী ওয়াং মিংইয়ু বলেন, ‘আমার মনে হয় না চীন বা যুক্তরাষ্ট্র কেউই সম্পর্কের অবনতি দেখতে চায়। তবে এই খেলা এবং মুখোমুখি অবস্থান হয়তো এখানেই শেষ নয়, এখনও ঝুঁকি রয়ে গেছে।’
প্রাক্তন মার্কিন বাণিজ্য কর্মকর্তা রায়ান মাজেরাস মনে করেন, এই শুল্কবিরতি উভয় পক্ষের জন্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং এটি কাঠামোগত চুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প সিএনবিসিকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনও মতভেদ রয়েছে। ট্রাম্প চীনকে সয়াবিন আমদানি চারগুণ বাড়ানোর দাবি জানালেও, এর বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ প্রযুক্তির পণ্য বিক্রির বিষয়ে অনিচ্ছুক। এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ট্রাম্প চীনকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে চাপ দিচ্ছেন।