যুক্তরাষ্ট্রে ২০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে অনিশ্চয়তা, বিপাকে বাংলাদেশিরাও


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল’ বিলটি দেশটির স্বাস্থ্যসেবা খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। এই বিলের আওতায় মেডিকেয়ার ও মেডিকেইডের মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে বড় বাজেট কাটছাঁটের ফলে ২০ লাখের বেশি মার্কিন অভিবাসী এবং নিম্ন আয়ের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রায় ২ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসীও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত এই বাজেটে ২০২৬-২৭ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ১ লাখ কোটি ডলার কাটছাঁট করার কথা বলা হয়েছে। অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-২৫-এর ডিস্ট্রিক্ট লিডার দিলীপ নাথের মতে, মেডিকেইড এবং স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্যসহায়তা প্রোগ্রাম (SNAP) থেকে প্রায় ৭৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলার, অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট থেকে ৩০ হাজার কোটি ডলার এবং মেডিকেয়ার থেকে ৫০ কোটি ডলার কাটছাঁট করা হবে।
এই বিশাল বাজেট কাটছাঁটের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে নিম্ন আয়ের পরিবার এবং অভিবাসীদের ওপর। বিশেষ করে, নথিপত্রহীন অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রায় অসাধ্য হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে যেখানে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ কেনা যায় না, সেখানে এই পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের একটি বড় অংশ হোম কেয়ার, রাইড শেয়ারিং, রেস্তোরাঁ, ডেলিভারি এবং ট্যাক্সি চালানোর মতো পেশার সঙ্গে যুক্ত। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই সরকারি স্বাস্থ্য সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি অভিবাসীর মধ্যে অধিকাংশই এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। প্রস্তাবিত এই বাজেটের কারণে তারা সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়বেন। এর ফলে অনেক হোম কেয়ার, ডে-কেয়ার এবং এমনকি হাসপাতালও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তবে অনেকেই মনে করেন, যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সপ্তাহে অন্তত ২০ ঘণ্টা কাজ করেন না, তারা মেডিকেইড থেকে বঞ্চিত হবেন। যারা কাজ না করে সরকারি সহায়তার ওপর নির্ভর করেন, তাদের এই ধরনের সেবা পাওয়ার অধিকার নেই।
৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিকদের সেবার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন হবে না। প্রস্তাবিত এই বাজেটে মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও বরাদ্দ না থাকায় এই খাতেও ব্যাপক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।