ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে সতর্ক করল জাতিসংঘ


ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণরূপে সামরিক দখলদারির অধীনে আনার ইসরায়েলি পরিকল্পনা থেকে অবিলম্বে সরে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। শুক্রবার (৮ আগস্ট) এক কঠোর সতর্কবার্তায় তিনি বলেন, ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং তা গাজাবাসীর জন্য আরও ভয়াবহ দুর্ভোগ বয়ে আনবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে টুর্ক বলেন, ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়ের পরিপন্থী। তিনি বলেন, ‘এ পরিকল্পনা ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সেই রায়ের পরিপন্থী; যেখানে বলা হয়েছে ইসরায়েলকে যত দ্রুত সম্ভব দখলদারির অবসান ঘটাতে হবে।’ ফলকার টুর্ক আরও উল্লেখ করেন যে, এই পদক্ষেপ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দীর্ঘমেয়াদী দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের ধারণাকেও সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করবে।
মানবাধিকারপ্রধান তার বিবৃতিতে সম্ভাব্য বিপর্যয়কর পরিণতির বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত পাওয়া সব প্রমাণ বলছে, এ নতুন উত্তেজনা আরও ব্যাপকভাবে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, আরও হত্যাযজ্ঞ, অসহনীয় কষ্ট, অযৌক্তিক ধ্বংসযজ্ঞ ও যুদ্ধাপরাধ ডেকে আনবে।’ তিনি ইসরায়েল সরকারকে যুদ্ধ আরও তীব্র না করে, গাজায় মানবিক সহায়তার ‘পূর্ণ ও বাধাহীন প্রবাহ’ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। টুর্কের মতে, সংঘাত বাড়তে থাকলে তা কেবল দুর্ভোগ ও ধ্বংসযজ্ঞকেই দীর্ঘায়িত করবে।
এই সংকটের সমাধান প্রসঙ্গে ফলকার টুর্ক শুধুমাত্র ইসরায়েলকে সতর্ক করেই থেমে থাকেননি। তিনি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে আটক সকল জিম্মিকে ‘অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি’ দেওয়ারও দাবি জানান। একই সাথে, ইসরায়েলের হাতে অবৈধভাবে আটক সকল ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান জাতিসংঘের এই শীর্ষ কর্মকর্তা। তার এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, তিনি উভয় পক্ষকেই আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার মেনে চলার জন্য সমানভাবে আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজায় যুদ্ধ এখনই শেষ হতে হবে এবং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের ‘শান্তিতে পাশাপাশি বসবাসের সুযোগ দিতে হবে।’