চাঁদে পারমাণবিক আধিপত্য, শুরু হচ্ছে নতুন মহাকাশ প্রতিযোগিতা


মহাকাশ গবেষণার নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে চলেছে, যেখানে লক্ষ্য এবার চাঁদের মাটিতে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন। যুক্তরাষ্ট্র ২০৩০ সালের মধ্যে এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে, যা কেবল মহাকাশ অনুসন্ধানের অগ্রগতিই নয়, বরং চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে চলমান মহাকাশ প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান সুসংহত করার একটি কৌশলও বটে।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে একটি ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই চুল্লি দীর্ঘমেয়াদি চন্দ্রাভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করবে। এটি শুধু বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতে মানুষকে চাঁদে পাঠানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের জন্য অবকাঠামো তৈরিতেও সহায়ক হবে। পলিটিকো-এর হাতে আসা এক অভ্যন্তরীণ নথি থেকে জানা গেছে, নাসা এই প্রকল্পের জন্য বেসরকারি খাত থেকে প্রস্তাব আহ্বান করবে।
নাসার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে পলিটিকোকে বলেন, ‘এটা দ্বিতীয় মহাকাশ দৌড়ে জয়ী হওয়ার বিষয়।’ এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, এই প্রকল্পের পেছনে কৌশলগত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও জড়িত।
নথিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে: যে দেশ প্রথম চাঁদে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন করবে, তারা চাঁদের নির্দিষ্ট অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে পারে, যা অন্য দেশগুলোর প্রবেশাধিকার সীমিত করে দেবে। এই প্রেক্ষাপটে, চীনের ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের প্রথম নভোচারীকে চাঁদে পাঠানোর প্রস্তুতির খবর এই প্রতিযোগিতাকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
নাসা এর আগেও একটি ছোট পারমাণবিক চুল্লি নিয়ে গবেষণা করলেও, এবারের উদ্যোগটি সময়সীমা এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার দিক থেকে অনেক বড় পরিসরে নেওয়া হচ্ছে। সূত্র অনুযায়ী, নাসা ৬০ দিনের মধ্যে এই প্রকল্পের নেতৃত্ব নির্বাচনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট শিল্পখাতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার নির্দেশ পেয়েছে, যা থেকে এই প্রকল্পের গুরুত্ব এবং দ্রুততা অনুমেয়।