ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোর নাম সুপারিশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার জেলেনস্কি নিজেই এ বিষয়ে কথা বলেছেন। এর মধ্যদিয়ে ইউক্রেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের রদবদলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমি ইউক্রেন সরকারকে নেতৃত্ব দিতে এবং এর কার্যক্রম নতুন করে শুরু করতে ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোর নাম প্রস্তাব করেছি। শিগগিরই নতুন সরকারের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনের অপেক্ষায় আছি আমি।’

জেলেনস্কি তার এ সুপারিশকে ইউক্রেন সরকারের ‘কার্যনির্বাহী শাখার রূপান্তর’ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জেলেনস্কি আরও বলেন, তিনি ও সিভিরিদেঙ্কো ইউক্রেনের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ানো, নাগরিকদের জন্য সহায়তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ এবং দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
চলতি বছর বিরল খনিজ–সংক্রান্ত চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে টানাপোড়েনের সময় আলোচনায় আসেন ৩৯ বছর বয়সী অর্থমন্ত্রী সিভিরিদেঙ্কো। তখন কিয়েভ ও তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র ওয়াশিংটনের সম্পর্ক অনেকটাই ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে পড়ে।
জেলেনস্কির প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহালের স্থলাভিষিক্ত হবেন সিভিরিদেঙ্কো। শ্যামিহাল ২০২০ সাল থেকে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব আছেন।
সিভিরিদেঙ্কোর একসময়ের সহকর্মী ও ইউক্রেনের সাবেক অর্থমন্ত্রী তিমোফি মাইলোভানভ বলেন, সরকারে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। কারণ, মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছে।বর্তমানে কিয়েভ স্কুল অব ইকোনমিকসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিমোফি মাইলোভানভ। তার মতে, তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে এ পরিবর্তনগুলো নতুন উদ্যম তৈরি করবে।
এর আগে গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেছিলেন, তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভকে ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করার কথা বিবেচনা করছেন।
সিভিরিদেঙ্কো ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া পুরোদমে হামলা করার কয়েক মাস আগে তিনি ইউক্রেনের সংকটাপন্ন অর্থনীতি পরিচালনার দায়িত্বে নিযুক্ত হন।
সিভিরিদেঙ্কোকে এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে হলে পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের পার্লামেন্টের একটি বড় অংশই জেলেনস্কির পাশে আছে। এবারও তারা প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে যাবে না বলে মনে করা হচ্ছে।