বড় পরিসরের ফেভারিট দল ছিল বেশ কয়েকটি। রিয়াল মাদ্রিদ, ইন্টার মায়ামির মতো দলগুলোকে হারিয়ে ফাইনালের আগে সেই তকমা ভালোভাবে নিজেদের করে নিয়েছিল প্যারিস সেন্ট জার্মেই। সেমিফাইনালে মাদ্রিদ ক্লাবকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা শিরোপার লড়াইয়ে পায় চেলসিকে, যারা অনেকটা চমক দেখিয়ে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে ফাইনালে ওঠে।
চমকের মধ্যদিয়ে শেষ হলো ক্লাব বিশ্বকাপের এবারের আসর। ফাইনালে ইউরোপসেরা পিএসজিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব চেলসি। রোববার নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের একাই পিএসজিকে নাকানিচুবানি খাওয়ালেন কোল পালমার।

ম্যাচের সাত মিনিটে তিনি ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের ভড়কে দেন। তার নেয়া শট গোলবারের পাশ দিয়ে লাগে সাইড নেটে। ২২ মিনিটে তাদের চেলসির গোলকিপার সানচেজের লম্বা বল ডান উইংয়ে পেয়ে গুস্তো বক্সে ঢুকে শট নিলেও প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় তা আটকে দেন। ফের গুস্তো কাট করে পালমারকে বল ফিরিয়ে দেন। এরপর বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে গোল করেন পালমার।
৩০ মিনিটে আবারও পালমার চেলসির ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। বক্সের ডানপাশ থেকে বল টেনে দ্বিতীয় গোল করেন। এটি চলতি মৌসুমে তার ১৮তম গোল। বিরতির আগে তৃতীয় গোল দেয় চেলসি। পালমারের পাসে ৪৩ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান তরুণ হোয়াও পেদ্রো পিএসজি কিপার দোনারুম্মার মাথার ওপর দিয়ে জালে বল পাঠান।

বিরতির পর মাঠে ফিরে গোল শোধের নেশায় মরিয়া ছিল পিএসজি। কিন্তু চেলসি কিপার রবার্ত সানচেজ প্রাচীর হয়ে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। ৫২ মিনিটে ছোট বক্সের সামনে থেকে উসমান দেম্বেলের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন সানচেজ। এর সাত মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ভিতিনহার শটও ডাইভ দিয়ে রুখে দেন সানচেজ। দালেপের একটি প্রচেষ্টা রুখে দিয়ে গোল ব্যবধান বাড়তে দেননি দোনারুম্মা।
খেলা শেষ হওয়ার ছয় মিনিট আগে পিএসজি ১০ জনের দলে পরিণত হয়। নেভেস চেলসির কুকুরেল্লার চুল টেনে ধরার পর রেফারি হলুদ কার্ড দেখান। তবে রিভিউয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে।

দুই দলই ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন, পিএসজির ঘরে এবার উঠেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা আর চেলসি তৃতীয় স্তরের উয়েফা কনফারেন্স লিগের চ্যাম্পিয়ন। তবে বিশ্বমঞ্চে চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ীদের ধরাশায়ী করে শিরোপা জিতলো তারা। ম্যাচসেরা হয়ে পালমার বলেন, ‘এটা অসাধারণ অনুভূতি, এমনকি তার চেয়েও বেশি কিছু। কারণ ম্যাচের আগে সবাই আমাদের নিয়ে সংশয়ে ছিল। যেভাবে আমরা লড়াই করলাম, তা দারুণ।’
চেলসি কোচ এনজো মারেসকা জানান, ‘খেলোয়াড়দের জন্য বলার কোনও ভাষা আমার নেই। তারা সবাই এটার দাবিদার এবং এটা চমৎকার মুহূর্ত।’

পিএসজিকে হারানোর কৌশল নিয়ে তিনি বললেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা প্রথম ১০ মিনিটে জিতেছি। আমরা ছন্দ তুললাম, তারপর তাদের ওপর চাপ তৈরি করেছি। কন্ডিশন আমাদের জন্য কঠিন ছিল, কিন্তু ছেলেরা ভালো করেছে।’
চেলসি পঞ্চম ও ইংল্যান্ডের প্রথম দল হিসেবে একাধিক ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের তালিকায় থাকা রিয়াল মাদ্রিদ (৬), বার্সেলোনা (৩), বায়ার্ন মিউনিখ (২) ও করিন্থিয়ান্সের (২) সঙ্গে যোগ দিয়েছে। চার বছর আগে ২০২১ সালের ফাইনালে পালমেইরাসকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্লুরা।