জন উইকের রহস্যঘেরা অপরাধ জগত এবার নতুন এক নারীর চোখ দিয়ে ধরা পড়ল। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘ব্যালেরিনা’ সিনেমার প্রধান চরিত্রে (ইভ ম্যাকারো) অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় কিউবান-স্প্যানিশ অভিনেত্রী আনা ডি আরমাস। যিনি একাধারে পরিশীলিত নৃত্যশিল্পী, আবার ভয়ঙ্কর প্রতিশোধপরায়ণ যোদ্ধা। জন উইক সিরিজের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির মাঝামাঝি সময়কে ভিত্তি করে নির্মিত এই সিনেমা, একই জগতে থেকেও গড়ে তুলেছে একেবারে স্বতন্ত্র গল্প।
সিনেমার শুরুতেই দেখা যায়, ইভ ম্যাকারো’র পরিবার নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর সে ফিরে আসে শৈশবের ব্যালে স্কুলে- যেখানে সাধারণ নৃত্য শেখানো হতো না, বরং তৈরি করা হতো প্রশিক্ষিত ঘাতক। ইভের কাছে প্রতিশোধ মানে শুধু হত্যার জবাব দেওয়া নয়, বরং নিজের অস্তিত্ব ও আত্মার মুক্তির লড়াই।

আনা ডি আরমাসের অভিনয়ে সংযত অথচ শক্তিশালী ইভ
এই সিনেমার মূল শক্তি আনা ডি আরমাসের সাবলীল অভিনয়। চরিত্রে কোনও অতিরঞ্জন নেই, নেই অহেতুক চিৎকার বা বাহাদুরি। কিন্তু তার চোখে-মুখে যন্ত্রণা, ক্লান্তি আর ক্রোধ মিলেমিশে তৈরি করে এক নির্মম বাস্তবতা। একাকিত্ব, স্বজন হারানোর বেদনায়ও ভেঙে পড়েনা এই চরিত্র। আর এটাকে দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন দর্শকপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
যেখানে জন উইক সিরিজ পরিচিত তার দুর্দান্ত অ্যাকশন ও স্টাইলিশ সহিংসতার জন্য, ‘ব্যালেরিনা’ সেখানে নতুন মাত্রা এনেছে- অ্যাকশন আর আবেগের এক অপূর্ব মিশ্রণ। বরফে ঢাকা অস্ট্রিয়ার হালস্টাট শহরের দৃশ্যগুলো যেন স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্নের মাঝামাঝি। আর একটি দৃশ্যে দেখা যায়, ইভ একটি অস্ত্রের দোকানে আগুন ছুড়ছেন ফ্লেমথ্রোয়ার দিয়ে যা শুনতে অতিরঞ্জিত হলেও দৃশ্যায়ন খুবই যথাযথ।

জন উইকের ছায়া, কিন্তু ইভের আলাদা পরিচয়
সিনেমায় জন উইকের জগতের পরিচিত উপাদান যেমন গোপন সংগঠন, সোনার মুদ্রা, বিলাসবহুল হোটেল সবই আছে। তবে ইভ কোনোভাবেই জন উইকের প্রতিচ্ছবি নন। তিনি কম কথা বলেন, বেশি বোঝান আর সেই নীরব রাগেই আছে গভীর তীব্রতা। কিয়ানু রিভস, ইয়ান ম্যাকশেনের মতো পরিচিত মুখও এই সিনেমায় দেখা গিয়েছে অল্প সময়ের জন্য হলেও।
দর্শকদের মতে, ‘ব্যালেরিনা’ হয়তো সবচেয়ে জটিল বা ব্যতিক্রমী ছবি নয়, কিন্তু এটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো এক অ্যাকশন চলচ্চিত্র যেখানে প্রতিশোধের ভেতরে লুকিয়ে আছে শোক, স্মৃতি আর নারীর জেদি টিকে থাকার গল্প। আর আনা দে আরমাস এই সিরিজে নতুন মুখ হিসেবে সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছেন।