টেক জায়ান্ট ইলন মাস্ককে নিয়ে ফের মুখ খুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি সরকারি দক্ষতা বিভাগ (DOGE)-কে আহ্বান জানিয়েছেন মাস্কের বিভিন্ন কোম্পানির প্রাপ্ত সরকারি ভর্তুকি খতিয়ে দেখার।
ট্রাম্প বলেন, ‘ইলন সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পাওয়া ব্যক্তি। যদি এই ভর্তুকি তিনি না পেতেন, তাহলে সম্ভবত এতদিনে তাকে ব্যবসা গুটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতো।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আর কোন রকেট উৎক্ষেপণ, উপগ্রহ, অথবা বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন নয়। আমেরিকা কোটি কোটি ডলার বাঁচাতে পারত। হয়তো ডজ (DOGE) এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারে! অনেক টাকা বাঁচাতে হবে!’
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জবাবে ইলন মাস্ক নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ পাল্টা লেখেন, ‘আমি তো নিজেই বলছি সব ভর্তুকি বন্ধ করুন। এখনই।’
এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য নতুন করে দ্বন্দ্ব উসকে দিয়েছে দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাতের ফলে মাস্কের কোম্পানিগুলোর সরকারি চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বাজারেও এর প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। প্রি-মার্কেট ট্রেডিংয়ে টেসলার শেয়ারের দাম কমে প্রায় ৫ শতাংশ। মাস্কের স্পেসএক্স বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে যুক্ত, যার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মাস্কই একসময় ছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প DOGE-এর প্রধান উপদেষ্টা এবং তিনি ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচন প্রচারে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। গত মাসে বাজেট ও কর বিল নিয়ে বিতর্কের সময় মাস্ক আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘যারা বাজেট কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এখন এই বিল সমর্থন করেছে, তারা আগামী নির্বাচনে পরাজিত হবে। আমি তা নিশ্চিত করব।’
মাস্ক এরপর নতুন একটি রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবও দেন, যার নাম দেন ‘আমেরিকা পার্টি’। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই দ্বন্দ্ব যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে রিপাবলিকান পার্টির জন্য ২০২৬ সালের কংগ্রেস নির্বাচন কঠিন হয়ে উঠতে পারে।