মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের ঘটনায় ইসরায়েলকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের ক্যানসার’ আখ্যা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কারণে এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে।’
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানায়, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটি।
‘ইসরায়েল বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি’ কিম জং উনের এমন মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধের জন্ম দিয়েছে ইসরায়েল। এমন আক্রমণাত্মক শক্তি কখনোই বিশ্বশান্তি ধ্বংসের দায় এড়িয়ে যেতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৩ জুন ভোরে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসীরা ইরানের বিরুদ্ধে বড় পরিসরের সামরিক অভিযান শুরু করে। আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের নীতিমালা লঙ্ঘন করে তারা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বর্বরতা চালাচ্ছে, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’
কিমের সরাসরি বার্তা: ইসরায়েল ‘ক্যানসারের মতো সত্তা’
সরকারি ভাষণে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন বলেন, ‘বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে যে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত ইসরায়েল হলো মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য ক্যানসারের মতো একটি সত্তা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েল চারটি বড় যুদ্ধ এবং কয়েক ডজন সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তার ভূখণ্ড সম্প্রসারণ করেছে। গাজা, পশ্চিম তীর, লেবানন ও সিরিয়া, প্রতিটি অঞ্চলে তারা রক্তাক্ত আক্রমণ চালিয়েছে। এইসব অভিযানে হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।’
পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকার কড়া সমালোচনা
কিম জং উনের ভাষ্যমতে, ‘পশ্চিমা শক্তিগুলো যুদ্ধকে উসকে দিচ্ছে এবং ইরানের আত্মরক্ষার অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। অথচ, ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী মানসিকতা নিয়ে তারা নিশ্চুপ।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যারা ইসরায়েলকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন করছে, তারা এই অনিয়ন্ত্রিত বিপর্যয়ের জন্য দায়ী থাকবে। এই যুদ্ধ ও অস্থিতিশীলতার দায় শুধু ইসরায়েল নয়, তাদের পেছনে থাকা পৃষ্ঠপোষকদেরও নিতে হবে।’
গত ১৩ জুন থেকে ইরানে একাধিক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, জবাবে ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এই পাল্টাপাল্টি হামলায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হাতে ২০০ জনের বেশি এবং ইরানের হামলায় প্রায় ২০ জন নিহত হয়েছে।