ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় খাবারের অভাবে চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মোহাম্মদ ইয়াসিন। এর মধ্য দিয়ে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ শুরুর পর অনাহারে মৃত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৮-তে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা উপত্যকাটির সুস্থ শিশুদের ওপর খাদ্যাভাবের প্রভাব পড়ছে।
গাজার চিকিৎসক ইজ্জেদিন শাহিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর প্রবণতা এক নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আগে দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগা বা বিশেষ যত্ন প্রয়োজন এমন শিশুদের ক্ষেত্রে দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর ঘটনা দেখা যেত। তবে এখন এমন শিশুদের ওপরও দুর্ভিক্ষের প্রভাব পড়ছে, যারা আগে প্রায় সুস্থই ছিল—অপুষ্টি ছাড়া যাদের কোনো পূর্ববর্তী শারীরিক সমস্যা ছিল না।’
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ৭০ হাজারের বেশি শিশু তীব্র মাত্রার অপুষ্টিতে ভুগছে। গাজার কর্মকর্তারা বলছেন, নিরপরাধ শিশুদের হত্যা এখন ইসরায়েলি সেনাদের জন্য যেন একটি বিনোদনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার খান ইউনিসে এক হামলায় নারী চিকিৎসকের ৯ সন্তান নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে তারা পর্যালোচনা করছে। ওই হামলায় চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির বয়স ১২ বছর এবং ছোটটির বয়স মাত্র কয়েক মাস।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, উপত্যকাটিতে চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৯০১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯৩ জন। আর গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, নিহত হওয়ার সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ হিসাবের ক্ষেত্রে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে নিখোঁজ থাকা মানুষদের মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। হামলায় আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়। জবাবে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল।