সময়ের জনমাধ্যম

ওয়েম্বলিতে শেফিল্ড ইউনাইটেডের ভাগ্য পরীক্ষা, সাথে হামজারও

ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে খেলার পরিসংখ্যান শেফিল্ড ইউনাইটেডের জন্য মোটেও সুখকর নয়, বিশেষত আগামীকালের ম্যাচের আগে। লন্ডনের এই ভেন্যুতে খেলা সাতটি ম্যাচে তাদের ঝুলিতে কোনো জয় নেই, একটি ড্র এবং বাকি ছয়টিতেই হেরেছে তারা। সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে-অফ ফাইনাল জিততে না পারলে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় টায়ারেই থাকতে হবে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে। এই ম্যাচ জিতলেই মিলবে বহু আকাঙ্ক্ষিত প্রিমিয়ার লিগের টিকিট।

মৌসুমজুড়ে শেফিল্ড ইউনাইটেড সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে উত্তরণের অন্যতম দাবিদার ছিল। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে ১৪৩ দিন শীর্ষ দুইয়ে ছিল ব্লেডরা, আর শীর্ষ ছয়ে ছিল ২৩৩ দিন। একমাত্র লিডস ইউনাইটেড ছাড়া অন্য কোনো দল এত ভালো অবস্থানে ছিল না। অথচ সেই লিডসের চেয়ে মৌসুমজুড়ে পিছিয়ে থাকা বার্নলে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে উঠে গেছে। আগামীকাল, বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে এই প্লে-অফ ফাইনালই হামজা চৌধুরীর ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডের প্রিমিয়ার লিগের টিকিট নিশ্চিত করবে। হারলে অবশ্য চ্যাম্পিয়নশিপ লিগেই থেকে যেতে হবে তাদের।

হামজা চৌধুরীর ব্যস্ত সময়সূচি ও ভবিষ্যৎ

সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পরই হামজা চৌধুরী জাতীয় দলের দিকে মনোযোগ দেবেন। ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের হোম ম্যাচ খেলবেন বাংলাদেশের জার্সিতে। বাংলাদেশের ম্যাচ শেষেই হামজা চৌধুরীকে তার ক্যারিয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি লেস্টার সিটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এবং বর্তমানে শেফিল্ড ইউনাইটেডে লোনে খেলছেন। সান্ডারল্যান্ড ম্যাচের পরই তার লোনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। শেফিল্ড ইউনাইটেড হামজা চৌধুরীর পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি এবং তাকে স্থায়ীভাবে রেখে দিতে চায়। তবে, লেস্টার সিটির সঙ্গে করা লোন চুক্তিতে স্থায়ী দলবদলের কোনো উল্লেখ নেই।

সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে প্লে-অফ ফাইনালের ফলাফল হামজা চৌধুরীর ভবিষ্যতের উপর বড় প্রভাব ফেলবে। গেল শীতকালীন দলবদলে বেশ ব্যস্ত ছিল শেফিল্ড ইউনাইটেড। প্লে-অফ জিতে প্রিমিয়ারে ফিরলে আসন্ন গ্রীষ্মকালীন দলবদলেও ‘ব্লেড’দের ব্যস্ত সময় কাটাতে হবে। সে ক্ষেত্রে হামজা চৌধুরীকে লেস্টার থেকে স্থায়ী চুক্তিতে কিনে নেওয়ার পথটা প্রশস্ত হতে পারে।

দলবদল বিশেষজ্ঞ এবং সাংবাদিক গ্রায়েম বেইলি হামজা চৌধুরীর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলেন, ‘হামজা চৌধুরী আসার পর থেকে শেফিল্ড ইউনাইটেড ম্যানেজমেন্ট এ ফুটবলারকে নিয়ে খুব খুশি। তারা হামজার একাধিক পজিশনে খেলার দক্ষতাকে পছন্দ করে। ক্লাবটির হাতে অবশ্য বিকল্পও আছে। কিন্তু শেফিল্ড এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

২৫ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতায় যুক্ত বেইলি আরও যোগ করেন, ‘হামজাকে স্থায়ীভাবে রেখে দেওয়ার ভালো সম্ভাবনা আছে, কিন্তু শেফিল্ড ইউনাইটেড মৌসুমের ফলের জন্য অপেক্ষা করবে।’

বর্তমানে হামজা চৌধুরীর ক্লাব লেস্টার সিটি প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে ফিরে গেছে। যদি শেফিল্ড ইউনাইটেড প্লে-অফ ফাইনাল হারে, তবে তারাও ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সারির লিগেই থাকবে। সে ক্ষেত্রে, আগামী মৌসুমেও হামজা চৌধুরীকে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগেই দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।