ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনার ধাক্কা লেগেছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট লিগ আইপিএলে। আইপিএল ২০২৫ আপাতত স্থগিত করা হয়েছে এক সপ্তাহের জন্য। এই সাত দিনে বিসিসিআই এবং টুর্নামেন্ট গভর্নিং কাউন্সিল আলোচনায় বসে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে।
ম্যাচ স্থগিত হওয়ার অর্থই হলো বিশাল আর্থিক ক্ষতি। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিটি ম্যাচ বন্ধ থাকার কারণে বিসিসিআইয়ের আনুমানিক লোকসান ১২৫ কোটি রুপি, যা প্রায় ১৬২.৫ কোটি বাংলাদেশি টাকার সমান! যদিও ক্ষতির একটি অংশ হয়তো বীমার আওতায় আসবে, তবুও সম্প্রচার, স্পনসরশিপ এবং ম্যাচ-সংশ্লিষ্ট আয় থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে একটি বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি থেকেই যাবে।
শুধু বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোই নয়, এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্টেডিয়ামের বাইরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও। যেমন হকার, রিকশা-ড্রাইভার, ট্যাক্সি চালক, খাবারের দোকানদার, এমনকি যে শহরের রেস্টুরেন্টগুলো ম্যাচের দিনগুলোতে লোকে লোকারণ্য থাকত, তারাও। আইপিএল মানেই যেন কোটি কোটি টাকার এক বিশাল বাণিজ্যক্ষেত্র, আর সেই হিসেবে এর একদিনের অচলাবস্থা মানেই অনেকের জীবিকার ওপর সরাসরি আঘাত।
যদি এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং শেষ পর্যন্ত আইপিএল বাতিল হয়ে যায়, তাহলে সম্প্রচারকারীরা প্রায় ৫৫০০ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন আয়ের এক-তৃতীয়াংশ হারাবেন। কেন্দ্রীয় আয়ের ওপর নির্ভরশীল দলগুলোও বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। গেট ইনকামের দিক থেকেও বড় ক্ষতি হবে। বিশেষ করে বেঙ্গালুরুর মতো শহরগুলোতে, যেখানে টিকিটের দাম অনেক বেশি এবং যেখানে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আরও দুটি হোম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
বিদেশি খেলোয়াড়রা ইতোমধ্যেই নিজ দেশে ফিরে গেছেন, তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং টুর্নামেন্ট দ্রুত পুনরায় শুরু হলে তাদের অনেকেই হয়তো ফিরে আসবেন। কিন্তু যদি পুরো আইপিএল বাতিল হয়, তবে বিসিসিআইকে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে একটি বিকল্প উইন্ডো নিয়ে চিন্তা করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের সীমিত ওভারের সফর এবং টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের সূচিতেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হতে পারে।