সময়ের জনমাধ্যম

পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, ভারতের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধি

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই নিজেদের সামরিক সক্ষমতার জানান দিলো পাকিস্তান। দেশটি দাবি করেছে, সফলভাবে ৪৫০ কিলোমিটার পাল্লার একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে তারা।

ইসলামাবাদ জানিয়েছে, “‘আব্দালি ওইপন সিস্টেম’ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র ‘ইন্দাস মহড়া’র অংশ হিসেবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে”। এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এমন এক সময়ে করা হলো, যখন কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

ভারতীয় সরকারি সূত্রের বরাতে খবর, এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ভারতের পক্ষ থেকে একটি “‘গুরুতর উসকানি’” হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পাকিস্তান সরকার তাদের বিবৃতিতে এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছে, ‘এই উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি যাচাই এবং ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত ন্যাভিগেশন সিস্টেম ও গতিশীলতা পরীক্ষা করা।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছেন।’

তবে ভারতের অভিযোগ ভিন্ন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান ‘নিয়মিতভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।’

পহেলগামের হামলার পর পাকিস্তানি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্য যেন আরও বেড়ে গেছে। দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার গত ২৯ এপ্রিল দাবি করেছিলেন, ‘ভারত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে।’ যদিও সেই সময়সীমা ইতোমধ্যেই অতিক্রান্ত হয়েছে। একই দিনে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ‘যদি কিছু ঘটার থাকে, তা ২-৩ দিনের মধ্যেই ঘটবে।’

গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র বৈসারণ উপত্যকায় এক নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন প্রাণ হারান। এই ঘটনার জের ধরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও শীতল হয়েছে এবং উভয় দেশই সামরিক প্রস্তুতিকে জোর দিচ্ছে বলে পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।