সময়ের জনমাধ্যম

এএসপি পদে অবিবাহিতদের নিয়োগের সুপারিশ

পুলিশে সহকারী পুলিশ সুপার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নতুন প্রস্তাবনা এসেছে। বিবাহিত ব্যক্তিদের পরিবর্তে অবিবাহিতদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে পুলিশের এক মতবিনিময় সভায় এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান এই প্রস্তাবটি তুলে ধরেন। তিনি সভায় উল্লেখ করেন, “পুলিশ একাডেমিতে এএসপি হিসেবে যাদের প্রশিক্ষণে পাঠানো হয় তাদের প্রায় ৭০ শতাংশই বিবাহিত। অনেকেরই সন্তান আছে। তারা সন্তান ঢাকায় রেখে প্রশিক্ষণে আসেন। তাদের মন পড়ে থাকে ঢাকায়। তাদের দিয়ে গুণগতমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া অনেকাংশেই সম্ভব হয় না। আবার প্রশিক্ষণ শেষে ঢাকার বাইরে বদলি করলেই তারা ঢাকায় থাকার জন্য তদবির করেন।”

ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান মনে করেন, “এমন প্রেক্ষাপটে অবিবাহিতদের বিসিএস পরীক্ষায় এএসপি হিসেবে নিয়োগ করলে তাদের গুণগতমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব। তিনি বিবাহিতদের বিসিএসে এএসপি হিসেবে নিয়োগ না করার প্রস্তাব করেন।”

সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে আরও কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সকল স্তরের পুলিশ সদস্যদের জন্য ঝুঁকি ভাতা চালু করা, আবাসন সংকট নিরসন, ট্রেনিং একাডেমিতে ভাতা প্রদান, নারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি, এবং পুলিশ সদস্য স্বামী-স্ত্রী হলে তাদের একই কর্মস্থলে পদায়ন করা। এছাড়াও নারী ট্রাফিক পুলিশের জন্য নারীবান্ধব টয়লেট এবং বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহের প্রস্তাবনাও পেশ করা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সভায় পুলিশের বিভিন্ন প্রস্তাবনা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং কিছু বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেন। তিনি বলেন, সরকার পুলিশ সদস্যদের তাদের নিজ জেলার কাছাকাছি পদায়নের বিষয়টি বিবেচনা করছে। পাশাপাশি, স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই পুলিশ সদস্য হলে তাদের একই জেলায় পদায়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার চিন্তাভাবনাও রয়েছে। কনস্টেবল থেকে শুরু করে সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদ পর্যন্ত ঝুঁকি ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান উচ্চসীমা (সিলিং) তুলে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যার ফলে নিম্ন স্তরের পুলিশ সদস্যরা আগের চেয়ে বেশি ঝুঁকি ভাতা পাবেন।

এছাড়াও, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো যেমন ট্রাফিক বক্স বা শেল্টার স্থাপন, রাতে টহলরত পুলিশ সদস্যদের জন্য তাঁবুর ব্যবস্থা এবং মাদক চোরাকারবারীদের মূলোৎপাটনে কঠোর অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা করেন।