লোহিত সাগরে ফের ঘটল বিপত্তি। মার্কিন নৌবাহিনী নিশ্চিত করেছে, তাদের একটি অত্যাধুনিক এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সোমবার এক বিবৃতিতে মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে বিমানটি সরানোর সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বিবৃতি অনুযায়ী, যখন বিমানটিকে ডেকে টেনে আনা হচ্ছিল, তখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায় এবং যুদ্ধবিমানটি ও সেটিকে বহনকারী ট্রাক্টর—দুটোই সাগরে পড়ে যায়। এই ঘটনায় একজন নাবিক সামান্য আঘাত পেয়েছেন, তবে দ্রুত চিকিৎসার পর তিনি এখন স্থিতিশীল।
তবে, এই ঘটনার একটি বিশেষ দিক উঠে এসেছে মার্কিন এক কর্মকর্তার সূত্রে। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত থেকে বাঁচতে ইউএসএস ট্রুম্যান আকস্মিকভাবে বড়সড় বাঁক নিয়েছিল। এই অপ্রত্যাশিত মোড় নেওয়ার ফলেই সম্ভবত এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেটটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাগরে পড়ে যায়।
নৌবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেটের মূল্য আকাশছোঁয়া, প্রায় ছয় কোটি মার্কিন ডলারের বেশি। এই ঘটনাটি যুদ্ধক্ষেত্রের ক্রমবর্ধমান জটিলতার আরও একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগেও এ ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে ইউএসএস গেটিসবার্গ রণতরী থেকে ভুলক্রমে আরেকটি এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়, যদিও সেই ঘটনায় পাইলটরা অক্ষত ছিলেন।
এদিকে, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মধ্য মার্চ মাস থেকে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ৭টি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন হারিয়েছে, যার প্রত্যেকটির মূল্য প্রায় তিন কোটি মার্কিন ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, লোহিত সাগরের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং হুতি বিদ্রোহীদের লাগাতার আক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিকে ক্রমশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে। এই প্রেক্ষাপটে, এই নতুন দুর্ঘটনা মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর এবং নৌবাহিনীকে আরও সতর্ক অবস্থানে নিয়ে এসেছে এবং ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।