সময়ের জনমাধ্যম

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের গুরুত্ব বিএনপির

প্রবাসীদের ভোটাধিকার কার্যক্রম শুরু করার ওপর জোর দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এই প্রক্রিয়া শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। তার মতে, এই কার্যক্রমের শুরুতে কিছু ত্রুটি বা অসম্পূর্ণতা থাকলেও, তা চর্চার মাধ্যমেই ধীরে ধীরে সংশোধন করা সম্ভব।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশন অডিটোরিয়ামে ‘সেমিনার অন ডেভেলপমেন্ট অব ভোটিং ফর ডায়াস্পোরা বাংলাদেশিস’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগকে বিএনপি স্বাগত জানায়। কারণ, এই দাবি দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপি উত্থাপন করে আসছে। তিনি ২০১৪ সালের আরপিও সংশোধন, ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়ার সংস্কার প্রস্তাব এবং ২০২২ ও ২০২৩ সালের বিভিন্ন দফাগুলোতেও প্রবাসী ভোটাধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন প্রবাসীদের জন্য অনলাইন, পোস্টাল ও প্রক্সি ভোটিংয়ের যে পদ্ধতি প্রস্তাব করেছে, তার মধ্যে যেটি সবচেয়ে সহজ, গ্রহণযোগ্য এবং সাশ্রয়ী হবে, বিএনপি সেই পদ্ধতিকেই সমর্থন করবে।

সেমিনারে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন নজরুল ইসলাম খান। তার সঙ্গে ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ আরও একজন সদস্য।

নজরুল ইসলাম খান এ সময় প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে কারা স্থায়ীভাবে বিদেশে বসবাস করছেন এবং কারা দেশে ফিরে আসেন, সেই পার্থক্য নির্ধারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। একইসঙ্গে, কোন দেশে কতজন প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, তার তালিকা তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন তিনি। তিনি শুধু জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মাধ্যমেই নয়, প্রবাসীদের পাসপোর্টের মাধ্যমেও ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ রাখার কথা বলেন।

আক্ষেপ প্রকাশ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকরা বছরের পর বছর ধরে নিয়মিত রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও, তারা যথাযথ মর্যাদা পাননি। তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে তাদের সম্মান জানানো উচিত।

এই সেমিনারে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সিনিয়র সাংবাদিক, নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ ও কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকারও সেমিনারে অংশ নেন। এছাড়াও, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের ও অতিরিক্ত মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে আরও অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল ইসলাম ও মহাসচিব অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, ডেভলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চান, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খালেদ, বাংলাদেশ জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আলী সাজু মল্লিক, এনপিপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান দেওয়ান, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক সম্পাদক মনির উদ্দিন পাপ্পু, জেএসডির ঢাকা মহানগর সমন্বয়ক কামাল পাটোয়ারী, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য বাবর চৌধুরী।