দক্ষিণ ইরানের হরমোজগান প্রদেশের বন্দর আব্বাসের কাছে শহিদ রাজায়ি বন্দরে শনিবার ব্যাপক বিস্ফোরণে অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। ওই দুর্ঘটনায় ১ হাজারের অধিক আহত হয়েছেন।
এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের যেকোনো প্রকার অবহেলা চিহ্নিত করার জন্য জোর দিয়েছেন তিনি।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক বার্তায় খামেনি বলেন, “নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা বাধ্য, তারা যেন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করেন, কোনো অবহেলা বা উদ্দেশ্য থাকলে তা উদঘাটন করেন এবং নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন।”

এদিকে, রোববার বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের দেখতে যান প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান। তিনি প্রথম সাহায্যে এগিয়ে আসাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে পেজেশকিয়ান বলেন, “আমরা সরাসরি দেখতে এসেছি সরকারের পক্ষ থেকে অনুসরণ করার মতো কিছু আছে কি না। যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, আমরা তাদের পরিবারের খেয়াল রাখার চেষ্টা করব এবং যারা আহত হয়েছেন, আমরা অবশ্যই তাদের প্রতি খেয়াল রাখব।”
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর সোমবার জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে ইরান। শহিদ রাজায়ি বন্দর ইরানের একটি বিশাল কন্টেইনার শিপমেন্টের কেন্দ্র এবং এটি প্রতি বছর ৭০ মিলিয়ন টন কার্গো হ্যান্ডেল করে, যার মধ্যে তেল এবং সাধারণ শিপিং অন্তর্ভুক্ত।
এর আগে, ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এস্কান্দার মোমেনি জানিয়েছিলেন, উচ্চ বাতাসের মতো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেও দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং এখনও ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি। সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোজাহেরানি বলেছেন, “বিস্ফোরণের কারণ খুঁজে বের করতে কিছু সময় লাগবে, তবে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তা হলো, বন্দরের এক কোণে কিছু কন্টেইনার রাখা ছিল যেগুলোতে সম্ভবত রাসায়নিক পদার্থ ছিল এবং সেগুলো বিস্ফোরিত হয়েছে। তবে আগুন না নেভা পর্যন্ত বিস্ফোরণের কারণ নিশ্চিত করা কঠিন।”
বায়ু দূষণের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির মাঝে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে তাৎক্ষণিকভাবে বন্দর আব্বাসে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইরান।