সময়ের জনমাধ্যম

‘জঙ্গিবাদ থেকে দূরে’ থাকার শর্তে সিরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

দীর্ঘ ১৪ বছর পর সিরিয়ায় নতুন সরকার গঠনের প্রেক্ষাপটে দেশটির ওপর থেকে সব ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার ওয়াশিংটন এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছে। এর ফলে, গৃহযুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথ প্রশস্ত হলো।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সিরিয়াকে এখন শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল দেশ হতে হবে। আজকের এই সিদ্ধান্ত দেশটির ভবিষ্যৎ আরও ভালো করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ তার এই বক্তব্য সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়।

এক সপ্তাহ আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় তিনি জানান, তুরস্ক ও সৌদি আরবের অনুরোধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

মার্কিন সরকার জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার ফলে সিরিয়ার নতুন সরকার এখন বিদেশি বিনিয়োগ গ্রহণ করতে পারবে। তবে, এর সঙ্গে কিছু শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলো হলো, সিরিয়া কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে পারবে না এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এই শর্তগুলো সিরিয়ার মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের প্রতিফলন।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে সিরিয়ায় নতুন করে ব্যবসা-বিনিয়োগ, তেল-গ্যাসসহ খনিজ খাতে লেনদেন এবং অতীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত কিছু সংস্থার সঙ্গেও এখন বৈধভাবে কাজ করা যাবে। এর আগে, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। বাশার আল-আসাদ ক্ষমতায় থাকাকালীন আমেরিকা সিরিয়ার সঙ্গে কোনো রকম অর্থনৈতিক সম্পর্ক রাখতে দেয়নি।

তবে, আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত কেবল সিরিয়ার জন্যই নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।