রাজধানীর শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে দুইজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
এর আগে বুধবার সকাল ১০টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে যেতে চাইলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্য আহত হন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা পরে শাহবাগ মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
বুয়েট শিক্ষার্থী ফাহিমুল আলম বলেন, ‘আমাদের স্পষ্ট দাবি—প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নে দ্রুত নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। পাশাপাশি প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ‘শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে। এতে আমাদের দুই সদস্যও আহত হয়েছেন।’
বিকাল পর্যন্ত সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। সরেজমিনে দেখা গেছে, শাহবাগ মোড় থেকে পিজি হাসপাতালে সামনে দিকে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। অন্যদিকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রকৌশল পেশার মান রক্ষায় তাদের তিনটি দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—
১. সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের নবম গ্রেডের পদে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে কেবল ন্যূনতম বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ দিতে হবে। কোটাভিত্তিক বা অন্য নামে নতুন পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
২. উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা টেকনিক্যাল দশম গ্রেডের পদে নিয়োগ পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে ন্যূনতম ডিপ্লোমা ধারীদের এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসি গ্র্যাজুয়েটদের জন্যও।
৩. বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেটেড বিএসসি কোর্সগুলোকে আইইবি-বিএইটিই-এর অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।