সময়ের জনমাধ্যম

রাসিক-সিসিকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে

রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। বুধবার (২১ জুন) সকাল আটটায় একযোগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৫৫টি কেন্দ্র ও সিলেটের ১৯০টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন ও ফয়সল কাদের জানিয়েছেন, যারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে অবস্থান করবেন বিকেল চারটার পরও তাদের ভোটগ্রহণ করা হবে।

দুই সিটিতে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। সিসিটিভির মাধ্যমে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচনের কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে। ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন।

রাসিক নির্বাচন

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ‘কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই আমরা। ভোটগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন তিন হাজার ৬১৪ জন কর্মকর্তা। ভোটকেন্দ্রগুলোতে এক হাজার ৫৬০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ইভিএম মেশিন রয়েছে এক হাজার ৭৩০টি। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী চার জন। সাধারণ ৩০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১২ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৬ জন। তবে সাধারণ ওয়ার্ডের একটিতে কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।’

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান জানান, ‘শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অতীতের যেকোনও নির্বাচনের চেয়ে এবারের রাজশাহী সিটি নির্বাচন হবে একটি মডেলস্বরূপ। ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা করার কোনও সুযোগ নেই।’

রাজশাহী সিটিতে ভোটার রয়েছেন তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন আর হিজড়া ভোটার ছয়জন। ১৫৫টি কেন্দ্রের এক হাজার ১৫৩টি ভোটকক্ষে ভোটার ভোট দিচ্ছেন।

রাজশাহীতে এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টির মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. মুরশিদ আলম এবং জাকের পার্টির মো. লতিফ আনোয়ার। এছাড়া ১০টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৪৬ জন এবং ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১১ প্রার্থী রয়েছেন।

সিসিক নির্বাচন

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের জানিয়েছেন, সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে ভোটগ্রহণ চলছে সিলেটে। সিসিকের সবকটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় কাজ করছে ১০ প্লাটুন বিজিবি। আছে  র‍্যাব ও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স। প্রতিটি কেন্দ্রে আনসার সদস্যের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া ৪২টি ওয়ার্ডের জন্য ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যেকোনও অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য মাঠে আছেন ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।

সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরিফ জানিয়েছেন, ‘প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। কেউ কোনও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সেইসঙ্গে কোনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিলেটে এবারের নির্বাচনে আটজন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

এছাড়াও সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তবে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত নজরুল ইসলাম বাবুলের মধ্যে, এমন আভাস দিয়েছেন ভোটাররা। সিসিকের মোট ভোটার চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০ জন আর নারী দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন।