রাতে এপস্টেইনের অফিসে কেন গিয়েছিলেন ট্রাম্প?


যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের প্রথম অভিযোগকারি মারিয়া ফার্মার এবার প্রকাশ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। সম্প্রতি সিএনএনের এক অনুষ্ঠানে তিনি ১৯৯৫ সালের এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন, যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
মারিয়া ফার্মারের ভাষ্য অনুযায়ী, এক রাতে নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটানে এপস্টেইনের অফিসে যাওয়ার পর তার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দেখা হয়। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প আমার দিকে এগিয়ে এসে কয়েক ফুট দূরে দাঁড়ান। তার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল জোরালো, যেন তিনি আমার সম্পর্কে এমন কিছু জানেন, যা আমি নিজেও জানি না। তার মুখে ছিল একধরনের তাচ্ছিল্যের হাসি। পুরো ঘটনাটিই আমার কাছে হুমকিস্বরূপ মনে হয়েছিল।’
ঘটনাটি ঘটে তখন, যখন মারিয়ার বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর। তিনি আরও জানান, অফিসে ঢোকার পর তাকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়, সেসময় ট্রাম্পের সঙ্গে তার কথাবার্তা হয়। পরে এপস্টেইন এসে ট্রাম্পকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেই মুহূর্তে মারিয়া ট্রাম্পকে বলতে শুনেছিলেন—’আমি তো ভেবেছিলাম মেয়েটির বয়স ১৬।’
এই মন্তব্য শুনে তিনি গভীর অস্বস্তিতে পড়ে যান। মারিয়া বলেন, ‘আমার ছোট বোনের বয়স তখন ১৫। সেই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের ওই কথাটা শুনে আমার গা ঘিনঘিন করে ওঠে।’
ট্রাম্প এপস্টেইনের সঙ্গে তার সম্পর্ক অস্বীকার করলেও বিভিন্ন নথিপত্রে তাদের ঘনিষ্ঠতা উঠে এসেছে। যদিও ট্রাম্প নিজে এখন পর্যন্ত সেই নথিগুলো জনসমক্ষে আনেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি শুধু বলেছেন, ‘এগুলো পুরোনো গল্প। বহু বছর ধরে এসব কথা ঘুরে ফিরছে।’
মারিয়ার বক্তব্যের পর হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সিএনএনকে জানানো হয় যে, ট্রাম্প কখনোই এপস্টেইনের অফিসে যাননি এবং তিনি নিজেই একসময় এপস্টেইনকে নিজের ক্লাব থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। তবে মারিয়া দাবি করেন, ওই বিবৃতি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার ভাষায়, ‘আমি নিজ চোখে ট্রাম্পকে অফিসে দেখেছি। তাদের মধ্যে সম্পর্কও যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ ছিল সে সময়।’
জেফরি এপস্টেইন শিশু ও কিশোরী পাচার এবং যৌন নিপীড়নের একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাবাস করছিলেন। বিচারাধীন অবস্থায় ২০১৯ সালে কারাগারে তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়, যা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে।
মারিয়া ফার্মারের এই নতুন বক্তব্য পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতীত সম্পর্ক ও কার্য-কলাপ নিয়ে আবারো আলোচনায়-সমালোচনার রসদ যোগাচ্ছে।