রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন শিশু রয়েছে। এছাড়াও বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ও মাইলস্টোন কলেজের একজন শিক্ষক রয়েছেন। এ পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৭৮ জন।
মঙ্গলবার সকালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সাইদুর রহমান এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউটে সোমবার রাতে আরও আটজন মারা গেছে। দুটি হাসপাতালে হতাহত বেশি। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ২৮ জন ভর্তি আছেন। সেখানে ১৫ জনের মৃতদেহ ছিল। এছাড়া বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছে ৪২ জন।
সায়েদুর রহমান জানান, মৃতদের মধ্যে ছয়টি মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি। তাদের ডিএনএ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে একটি দেহাবশেষ নেওয়া হয়েছিল। ঢাকা মেডিকেলে তিনজন ভর্তি। ইউনাইটেড হাসপাতালে একজনকে মৃত অবস্থায় নেওয়া হয়।
ডা. সাইদুর রহমান জানান, নিহত শিশুদের মধ্যে অনেকের বয়স ১২ বছরের কম। দগ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বাকি দুইজনের মধ্যে রয়েছেন বিমানের পাইলট এবং একজন শিক্ষিকা। এ পর্যন্ত ২০টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'আমরা আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে, কয়েকজনের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।'
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আত্মীয়-স্বজন ও উৎসুক জনতার অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে আজ থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিরাপত্তা জোরদার এবং প্রবেশপথে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, গতকাল বেলা একটা ছয় মিনিটে রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটি স্কুল ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়। বেলা একটা ১৮ মিনিটে এই খবর পায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই আগুন ধরে যায় স্কুল ভবনে। তখন দগ্ধ শিশুদের আর্তনাদ, সন্তানের খোঁজে পাগলপ্রায় মা-বাবা ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ১৭১ জন।