যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের দুর্দশা নিয়ে পুতিনকে মেলানিয়ার ব্যক্তিগত চিঠি


আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সেই বৈঠক রাজনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি জন্ম দিয়েছে এক ভিন্ন কৌতূহলের। ট্রাম্পের হাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য একটি ব্যক্তিগত চিঠি তুলে দেন তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা যায়, এই চিঠির মূল বিষয় ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে শিশুদের দুর্দশা।
ট্রাম্প নিজে সরাসরি বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও, তার স্ত্রী মেলানিয়া যুদ্ধের ভয়াবহতা ও বিশেষত শিশুদের অপহরণের অভিযোগ নিয়ে পুতিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন। স্লোভেনিয়ায় জন্ম নেওয়া ফার্স্ট লেডি তার স্বামীর সফর থেকে দূরে থাকলেও মানবিক সংকট নিয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন এই চিঠির মাধ্যমে।
ইউক্রেনের অভিযোগ, রুশ সেনারা হাজার হাজার ইউক্রেনীয় শিশুকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেছে। তাদের অনেককেই পাঠানো হয়েছে রাশিয়া বা দখলকৃত অঞ্চলে। কিয়েভ এই ঘটনাকে শুধু যুদ্ধাপরাধই নয়, বরং জাতিসংঘের সনদে উল্লিখিত ‘গণহত্যা’ বলে মনে করছে।
মস্কো অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিপন্ন শিশুদের কেবল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে জাতিসংঘ বলছে, ২০২২ সালে পূর্ণমাত্রার রুশ হামলার পর লাখ লাখ শিশু মানবিক সংকটে পড়েছে। তাদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং অনেকেই পরিবার হারিয়েছে।
আলাস্কার মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ট্রাম্প ও পুতিনের তিন ঘণ্টার বৈঠকটি ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে হলেও, কোনো যুদ্ধবিরতি বা রাজনৈতিক সমাধানের ঘোষণা আসেনি। এই পরিস্থিতিতে মেলানিয়ার চিঠিটি এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, মেলানিয়ার এই চিঠি শুধু আবেগপ্রবণ উদ্যোগ নয়। এটি একটি প্রতীকী বার্তা, যা যুদ্ধের মধ্যে নিরীহ শিশুদের দুর্দশা আন্তর্জাতিক মহলে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরার চেষ্টা। এই চিঠি রাজনৈতিকভাবে সরাসরি প্রভাব না ফেললেও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রাশিয়ার ওপর এক ধরনের নৈতিক চাপ তৈরি করতে পারে।