যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি উপেক্ষা করে রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখছে ভারত

ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করছে না ভারত। দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির কারণে এই আমদানি রাতারাতি থামিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ভারত একদিকে তার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, অন্যদিকে ট্রাম্পের চাপকে কার্যত উপেক্ষা করছে।
গত মাসে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার জন্য ভারতকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার হুমকি দিয়েছিলেন। শুক্রবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি শুনেছেন যে ভারত নাকি আর রুশ তেল কিনছে না। তবে শনিবার নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে ভারতের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দিল্লি সরকার তেল কোম্পানিগুলোকে আমদানি কমাতে কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘আমরা জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে বাজারের পরিস্থিতি, সরবরাহ ও বৈশ্বিক অবস্থান বিবেচনায় নিই। ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের ও পরীক্ষিত। আমাদের প্রতিটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক তাদের নিজস্ব ভিত্তিতে গড়ে ওঠে, তৃতীয় কোনও দেশের প্রভাব এখানে নেই।’
রাশিয়া বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ। ভারতের মোট আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশ জোগান দেয় রাশিয়া। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত রাশিয়া থেকেই সবচেয়ে বেশি তেল এসেছে ভারতে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ইরাক, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ ভারত চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রতিদিন প্রায় ১৭.৫ লাখ ব্যারেল রুশ তেল আমদানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি। ভারতের প্রধান রিফাইনারিগুলো হলো ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম ও ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি। যদিও জুলাই মাসে রুশ তেলের ওপর ছাড় কমে যাওয়ায় গত সপ্তাহ থেকে এই রিফাইনারিগুলো নতুন কোনো চালান কেনা বন্ধ রেখেছে।
ভারতের অন্যতম বৃহৎ তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নায়ারা এনার্জি সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। রুশ মালিকানাধীন এই কোম্পানিটির তিনটি জাহাজ এখনও তেল খালাস করতে পারছে না।




