মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোনো কোনো জায়গায় ভূমিধসের শঙ্কা আছে। একই কারণে ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায়ও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলে বাতাস অনেক বেশি রয়েছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া ঢাকাসহ অন্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
পূর্বাভাসে যা বলা হয়েছে
রোববার সকাল নয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
একইভাবে আগামীকালকের পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
হতে পারে ভারী বৃষ্টিপাত
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রোববার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (২৪ ঘণ্টায় ১৮৮ মিলিমিটার) বৃষ্টিপাত হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের শঙ্কা রয়েছে। সেসঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।
সমুদ্রবন্দরে সতর্কতা
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সতর্কতা নদীবন্দরেও
রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর গুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসাথে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি। বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও আশেপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
