মেসির মতো কেউ আসবেনা, বলেই কাঁদলেন স্কালোনি


বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোরে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। বুয়েনস এইরেসের এস্তাদিও মনুমেন্তালে অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচটাই কি হতে যাচ্ছে জাতীয় দলের হয়ে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ বাছাইয়েল শেষ ম্যাচ? আর্জেন্টিনার জার্সিতে দেশের মাটিতে আর কি মাঠে নামবেন না ক্ষুদে জাদুকর?
এমন অনেক প্রশ্ন সমর্থকদের মাথায় যেমন ঘুরছে, খোদ আর্জেন্টাইনরাও মেসিকে নিয়ে সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত। তাই মেসির জন্য আবেগের স্ফূরণ ঘটছে আর্জেন্টাইন ফুটবলের সমর্থকদের মধ্যে। দেশটির বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তিকে নিয়ে বলতে গিয়ে কারও কারও দুই চোখও ভিজছে। শুধু সমর্থক নয়, খোদ কোচ লিওনেল স্কালোনিও বাদ যাননি আবেগাক্রান্ত হতে।
বুধবার রাতে ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলন ছিল আবেগঘন। সেখানেই স্কালোনির কণ্ঠে ঝড়লো হতাশা! জানালেন- মেসির উত্তরসূরি কখনো পাওয়া সম্ভব নয়।
নিজের খেলোয়াড়ি জীবনের শুরু থেকেই মেসিকে চেনেন স্কালোনি। দুজন একসময়ের আর্জেন্টিনা দলে সতীর্থ। পথচলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না, কেঁদে ফেলেন। সেখানে এক সাংবাদিকও আবেগাপ্লুত হলেন। পরিস্থিতি হালকা করার জন্য স্কালোনি মজা করে বলেন, ‘আপনি কি কাঁদছেন? এটা তো আমার উদ্দেশ্য ছিল না।’
জবাবে সাংবাদিক বলেন, ‘আপনি আমাকে জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ উপহার দিয়েছেন।’ এ কথা শুনে কোচ স্কালোনির চোখও ভিজে যায়, কণ্ঠ কেঁপে ওঠে। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, মেসি আসলে তাঁর জীবনে, কোচিং ক্যারিয়ারে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
মেসির সাথে খেলার স্মৃতিচারণা করে স্কালোনি বলেন, ‘আমি ওর সঙ্গে খেলেছি। শুধু বলটা ওকে পাস দেওয়াটাই আমার কাছে বিশেষ ব্যাপার ছিল। বিশ্বকাপে ওর সঙ্গে থাকা আর ওকে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে দেখা সত্যিই হৃদয়স্পর্শী এক অভিজ্ঞতা। সময় গড়ানোর সঙ্গে আমরা সবাই এর অর্থ আরও গভীরভাবে বুঝতে পারব। আগামীকাল দিনটা হবে সুন্দর আর আবেগময়। তবে আমার আশা আর্জেন্টিনায় এটাই ওর শেষ ম্যাচ হবে না। আমরা চেষ্টা করব যেন ও চাইলে আরেকটা ম্যাচ খেলতে পারে। কারণ, এটা ওর প্রাপ্য।’
২০২৬ বিশ্বকাপের সময় মেসির বয়স ৩৯ পেরিয়ে যাবে। বিশ্বকাপ শেষে আর্জেন্টিনার জার্সি চিরতরে তুলে রাখার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। এরপর মেসির মতো আর কাউকে কি পাবে আর্জেন্টিনা? স্কালোনির উত্তর, ‘আর্জেন্টিনা বা বিশ্ব ফুটবলে মেসির উত্তরাধিকারী? না, এমন কেউ হতে পারবে না। হবেও না। হয়তো কয়েকজন দুর্দান্ত খেলোয়াড় আসবে, যারা একটি যুগকে সংজ্ঞায়িত করবে। কিন্তু এত দিন ধরে সে যা করেছে, আমার মনে হয় তা অতুলনীয় হয়ে থাকবে। ফুটবলে অনেক অকল্পনীয় ঘটনা ঘটে। কিন্তু আমি প্রায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, ওর মতো কাউকে আর দেখা যাবে না। আমার মনে হয় ওর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।’
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ২০ বছরের ক্যারিয়ারে আর্জেন্টিনার হয়ে ১৯৩ ম্যাচ খেলেছেন মেসি, গোল করেছেন ১১২টি। জিতেছেন চারটি ট্রফি—২০২১ ও ২০২৪ কোপা আমেরিকা, ২০২২ ফিনালিসিমা ও ২০২২ বিশ্বকাপ, যা তাঁকে ‘অমরত্বের স্বাদ’ পাইয়ে দিয়েছে।