সময়ের জনমাধ্যম

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নূরে আলম সিদ্দিকীর প্রয়াণ, রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শোক

বাঙালির স্বাধীনতার ইতিহাসের দুর্দমনীয় অমিততেজি জ্যোতিষ্ক, সংগ্রামী বাঙালি চৈতন্যের অনন্য ব্যক্তিত্ব, স্বাধীকার আন্দোলনের প্রথম সারির বীর সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর নূরে আলম সিদ্দিকী মারা গেছেন।

বুধবার ভোররাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৪০ সালের ২৬ মে (বৃহত্তর যশোর জেলার ঝিনাইদহে মহকুমা,) বর্তমান ঝিনাইদহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সত্তরের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। এরপর স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছয় দফা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন যশোর-২ (বর্তমানে ঝিনাইদহ-২) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

তারঁর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তারা।

শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নূরে আলম সিদ্দিকী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল ছিলেন। তিনি থেকে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ছয় দফা এবং ৭০ এর নির্বাচনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জাতির এই সাহসী সন্তানের অবদান পরবর্তী প্রজন্ম চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

নূরে আলম সিদ্দিকীর বড় ছেলে ও সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সংবাদ মুহূর্তকে জানান, বুধবার ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার বাবা মারা যান। সকাল ১০টায় তাঁর মরদেহ হেলিকপ্টারে করে ঝিনাইদহে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানাজার পর হেলিকপ্টারে করে মরদেহ ঢাকায় আনা হয়। বাদ আছর গুলশানের সেন্ট্রাল মসজিদে জানাজা শেষে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হবে। এরপর গাজীপুরে নূরে আলম সিদ্দিকী প্রতিষ্ঠিত নবী টেক্সটাইল ও ডরিন গার্মেন্টেসের মসজিদের পাশে তাঁকে চিরতরে শায়িত করা হবে।