সময়ের জনমাধ্যম

মহড়া শেষেও তাইওয়ান ঘিরে রেখেছে চীনা যুদ্ধ জাহাজ

সামরিক মহড়া শেষ হওয়ার পরও চীনা যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনীর জাহাজ এখনো তাইওয়ানের আশপাশে রয়েছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছে। তাইওয়ান ঘিরে চীনের তিন দিনব্যাপী সামরিক মহড়া সোমবার শেষ হয়।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন চীনের এই মহড়াকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আচরণ বলে মন্তব্য করেছেন। কদিন আগে চীনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সাথে বৈঠক করেছিলেন সাই। বৈঠক শেষে সাই তাইপে ফেরার পর গত শনিবার তাইওয়ান ঘিরে মহড়া শুরু করে বেইজিং।

সোমবার রাতে মহড়া শেষ হয়েছে বলে জানায় চীন। কিন্তু তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মঙ্গলবার সকালে তারা দ্বীপের চারপাশে চীনা নৌবাহিনীর নয়টি জাহাজ ও ২৬টি যুদ্ধবিমান দেখেছে। এগুলো দ্বীপের চারপাশে যুদ্ধ প্রস্তুতির টহল দিচ্ছিল।

তারা আরও জানিয়েছে, তাইওয়ানের বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ক্রুরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাইওয়ানের সরকার বারবার চীনের এই ধরনের সামরিক মহড়ার নিন্দা জানিয়ে আসছে। তবে তাইওয়ান এ কথাও বলছে, তারা কোনোভাবে উসকানি দেবে না।

গতকাল মধ্যরাতের কিছু আগে সাই ফেসবুকে উল্লেখ করেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বিশ্বের কাছে তাইওয়ানের প্রতিনিধিত্ব করেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতিসহ তার বিদেশ সফর নতুন নয়। কিন্তু চীন সামরিক মহড়া শুরুর জন্য এই বিষয়কে ব্যবহার করেছে। চীনের এই মহড়া তাইওয়ানসহ এই অঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এই অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের (চীন) এমন আচরণ দায়িত্বশীল নয়।’

এদিকে, চীনের সামরিক মহড়ায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাপান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসুকাজু হামাদা এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া চীনের সামরিক মহড়াকে ‘ভীতিকর প্রশিক্ষণ’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

হামাদা সাংবাদিকদের বলেন, চীন সামরিক মহড়ার মাধ্যমে তাইওয়ান ইস্যুতে একটি ‘আপসহীন মনোভাব’ দেখিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দাবি করে চীন। তাই দ্বীপটিকে নিয়ন্ত্রণে নিতে অনেক দিন ধরে শক্তি দেখিয়ে আসছে বেইজিং। তবে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র মনে করে। তাছাড়াও তাইওয়ানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণেও দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করার নীতিতে চলছে এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি চীন।