সময়ের জনমাধ্যম

ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানার অতিরিক্ত অর্থ নিলেন এসিল্যান্ড!

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায় করে সে অর্থ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সালেক মুহিদের বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের অভিযোগে স্থানীয় কৃষকদের বিভিন্ন অংকের জরিমানা করেন এসিল্যান্ড। কিন্তু জেলেদের যে পরিমাণ টাকা জরিমানা করা হয়েছে তার থেকে কম অংক সরকারি রশিদে উল্লেখ করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের চরকানকুনি এলাকায় ফজলে করিম মৃধার ছেলে কবির মৃধা নামে এক ব্যক্তিকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৫(১) ধারায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কবির মৃধার অভিযোগ, তার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে।

কবির মৃধা বলেন, ‘আমি কোন সময় কারো সাথে অন্যায় করিনি, কিন্ত এসিল্যান্ড আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছেন, সবার সামনে আমাকে তুই তোকারি করে কথা বলেছেন, অপমান করেছেন। আমি আমার জমির মধ্যে দিয়ে খাল যাওয়ায় সেখানে মাছ চাষ করছিলাম এই আমার অপরাধ। এ জন্য আমাকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি। স্থানীয়রা আমার সম্মান রক্ষায় তাৎক্ষণিকভাবে এই টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু পরে দেখি সরকারি রশিদে তাতে লেখা ৪০ হাজার টাকা। আমি এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’

পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করার কোন বিধান পাওয়ায় যায়নি। আইনের বিভিন্ন ধারায় দেখা যায়, সেখানে অন্যূন ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সালেক মুহিদ (পরিচিতি নং ১৮৬৩৬) বলেন, খালের বাঁধগুলো অপসারণের জন্য বাড়তি টাকা নেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা কাজ করছেন এ দিয়ে তাদের মজুরি পরিশোধ করা হচ্ছে। এ বাবদ এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এমন করে টাকা নেয়ার কোন আইনগত বৈধতা রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি এসিল্যান্ড সালেক মুহিত।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে এ বিষয়ে দু’জন ব্যক্তি মোবাইল ফোনে অভিযোগ জানিয়েছে। আমি তাদের লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেছি। এছাড়া আমি এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়কে অবহিত করেছি।’

এ বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ কামাল হোসেনের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।