নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে তাকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। তাকে তলব করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিএম) বি শ্যাম।
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির নিয়ে নয়াদিল্লির গভীর উদ্বেগের বিষয়ে জানাতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছে। এর আগে গেল রোববার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। এর ঠিক তিন দিনের মাথায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হলো।
বুধবার দুপুরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশে ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লির গভীর উদ্বেগ জানাতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে। এ সময় তার মনোযোগ বিশেষভাবে আকর্ষণ করা হয় ‘কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠীর’ কর্মকাণ্ডের দিকে, যারা ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে।
এদিকে ‘চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির’ বিষয়টি বিবেচনায় বুধবার বেলা দুইটা থেকে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসার আবেদন কেন্দ্র (আইভ্যাক) তাদের ওয়েবসাইটে এই বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘চরমপন্থী মহল’ যে ভুয়া বয়ান তৈরির চেষ্টা করছে, ভারত তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। দুঃখজনকভাবে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এসব ঘটনার বিষয়ে এখনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করেনি কিংবা ভারতের সঙ্গে অর্থবহ কোনো তথ্যপ্রমাণও বিনিময় করেনি।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এর ভিত্তি গড়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সংগ্রামে, যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে আরও সুদৃঢ় হয়েছে। বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে ভারত রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে আসছে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন ভারতীয় মিশন ও পোস্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, এমনটাই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা করে নয়াদিল্লি।