ভারতের অর্থনীতি মৃত: ট্রাম্পের মন্তব্যে সুর মেলালেন রাহুল গান্ধী


কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সংসদ ভবনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, ভারতের অর্থনীতি ‘মৃত’। গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন এবং পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এও একই কথা লিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এর জন্য সরাসরি দায়ী করেন।
গতকাল বুধবার ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ভারতকে নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেন। তিনি লেখেন, ‘ভারত ও রাশিয়া—দুই দেশের অর্থনীতিই মৃত। দুই দেশের মধ্যে কী বোঝাপড়া হয়েছে, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। তারা একই সঙ্গে মৃত অর্থনীতি নিয়ে রসাতলে যেতে পারে। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য খুবই কম। ওদের শুল্কহার প্রচণ্ড চড়া। পৃথিবীর সর্বোচ্চ। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য হয় না বললেই চলে। অতএব, ও নিয়ে না ভাবলেও চলবে।’
সংসদ ভবন চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘ভারতের অর্থনীতি যে মৃত, তা সবাই জানেন। আপনারা জানেন না? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ছাড়া এই সত্য সবার জানা। আমি খুশি যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সত্যি কথাটা বলেছেন। গোটা পৃথিবী জানে ভারতের অর্থনীতি মৃত। আদানিকে সাহায্য করতে গিয়ে দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে বিজেপি।’
এরপর তিনি এক্স-এ করা পোস্টে অর্থনীতির এই অবস্থার পাঁচ কারণ উল্লেখ করেন:
১.আদানি-মোদি অংশীদারত্ব: রাহুল এই অংশীদারত্বকে দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন। ২.নোট বাতিল ও ত্রুটিযুক্ত জিএসটি: এই দুটি নীতিকে তিনি অর্থনীতির ওপর চরম আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেন। ৩.‘অ্যাসেম্বল ইন ইন্ডিয়া’ নীতি: তার মতে, এই নীতি দেশের শিল্প খাতকে দুর্বল করেছে। ৪.ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ধ্বংস: রাহুল এর ফলে কর্মসংস্থান কমেছে বলে দাবি করেন। ৫.কৃষকদের দুর্দশা: কৃষকদের সংকটাপন্ন পরিস্থিতিকেও তিনি অর্থনীতির পতনের কারণ হিসেবে তুলে ধরেন। এই কারণগুলো তুলে ধরে রাহুল লেখেন, ‘দেশের যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ মোদি তছনছ করে দিয়েছেন। কারণ, কোথাও কোনো চাকরি নেই।’
রাহুল গান্ধী আরও অভিযোগ করেন, মোদি সরকার শুধু শিল্পপতি গৌতম আদানির স্বার্থে কাজ করছে এবং এর ফলে দেশের অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি ধ্বংস হচ্ছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তি হলে ট্রাম্পই সেটির শর্ত নির্ধারণ করবেন এবং মোদি কেবল তা মেনে নিতে বাধ্য হবেন।