বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করলো যুক্তরাষ্ট্র


পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে সক্রিয় স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং তার সামরিক শাখা মাজিদ ব্রিগেডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১২ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দিয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে বিএলএ-এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিএলএকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ এবং মাজিদ ব্রিগেডকে ‘স্পেশালি ডেজিগনেটেড গ্লোবাল টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন’ (এসডিজিটি) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপের পেছনে বিএলএ-এর সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতির তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালে এসডিজিটি তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও বিএলএ-এর তৎপরতা কমেনি। বরং ২০২৪ সালে তারা করাচি ও গাওদার বন্দরে আত্মঘাতী হামলা চালায় এবং ২০২৫ সালের মার্চে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের জিম্মি ও হত্যা করার মতো বড় ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আজকের পদক্ষেপ সেই প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। আমাদের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে ‘সন্ত্রাসী তকমা’-এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হ্রাসের একটি কার্যকর উপায় এই তকমা।’
সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত হলে বিএলএ-এর সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ, সম্পত্তি কেনা বা তাদের সঙ্গে যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো সময় তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানও চালাতে পারে।
২০০০ সালে গঠিত হওয়ার পর থেকেই বিএলএ পাকিস্তানের জন্য মাথাব্যথার কারণ। পাকিস্তান সরকার অনেক আগেই এই গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ভারত এই গোষ্ঠীকে মদদ দিচ্ছে, এমন অভিযোগ ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। যদিও নয়াদিল্লি বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এমন কঠোর পদক্ষেপ পাকিস্তান সরকারের জন্য বড় কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।