ফেসবুক স্টোরির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষক নিয়োগের জন্য জামায়াতের সাবেক এমপির সুপারিশ করা প্রবেশপত্র নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান। অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খানের স্টোরিটি ১৫ মিনিট পর তিনি সরিয়ে ফেলেন।

শনিবার (২ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে প্রকাশ হওয়া ওই স্টোরিতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের প্রবেশপত্রে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক এমপি,  জামায়াত নেতা  লতিফুর রহমান সুপারিশ রয়েছে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের দুইবারের সাবেক এমপি। ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ওই প্রার্থীর প্রবেশপত্র ভুলভাবে স্টোরিতে চলে এসেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ফরিদ খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার ফেসবুক স্টোরিতে একজন আবেদনকারীর প্রবেশপত্র কীভাবে আপলোড হয়েছে বুঝতে পারিনি। তবে মোবাইল ফোনটি নিয়ে আমার ছেলে বেশ কিছু সময় গেম খেলেছিল। তখন হয়তো ভুলবশত স্টোরিতে এসে গেছে।’

তিনি আরও লিখেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো আবেদনকারী বা তাদের পক্ষে বিভিন্ন সূত্রে সাক্ষাৎ করতে এসে সিভি-প্রবেশপত্র দিয়ে যায়। আবার অনেকে ফোন করে আবেদনকারীর প্রবেশপত্র হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করে, কেউ টেক্সট করে সুপারিশ পাঠায়। রুয়ার নির্বাচনের সময় একজন অ্যালামনাস যিনি সাবেক এমপি ছিলেন উনার সঙ্গে পরিচয় হয়। কয়েকদিন আগে উনি ফোন করে উনার এলাকার একজন আবেদনকারীর কথা বলেন এবং তার প্রবেশপত্র সেন্ড করেন।

‘শুধু জামায়াত নেতাই নয়, বিভিন্ন সূত্রে এমন ডজনখানিক সুপারিশ করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিচিত অনেকেই এরকম সুপারিশ করেন। তাদের মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক, বন্ধু, সহকর্মী, রাজনীতিক অনেকেই আছেন। এই মুহূর্তে আমার অফিসে এবং মোবাইল ফোনে ডজনখানিক এরকম সুপারিশ আছে। তবে এগুলো কোনোভাবেই লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে না। আশা করি বিষয়টি নিয়ে কেউ ভুল বুঝবেন না। ভুলবশত এই স্টোরির জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি। ধন্যবাদ।’

প্রবেশপত্রে করা সুপারিশ ও সিগনেচারটা কার জানতে চাইলে অধ্যাপক ফরিদ খান বলেন, যেভাবে স্টোরিতে থাকা ওই প্রবেশপত্র দেখা গেছে, আমার কাছে ওভাবেই এসেছিল। যিনি পাঠিয়েছেন তার লেখা কি না আমি নিশ্চিত নই।

ডজনখানিক প্রবেশপত্রে কারা সুপারিশ করেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাকিগুলো শিক্ষক, ছাত্র, আবেদনকারী নিজেও এসেছে দেখা করতে। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের কেউ নয়। সুপারিশপত্র কেউ দেখা করতে এসে দিয়ে গেছে। কেউ হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে।

সুপারিশ করা জামায়াতের সাবেক এমপি লতিফুর রহমান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ। আর বিষয়টা নিয়ে আমি অবগত আছি। তবে এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে রাজি না ‘

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীবকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।