ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতাদের সাথে বৈঠকের পর জেলেনস্কি জানিয়েছেন, দশ দিনের মধ্যে কিয়েভের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চূড়ান্ত হতে পারে। এই ঘোষণার মধ্যে আছে বড় এক বার্তা, ইউক্রেন শুধু প্রতিশ্রুতির অপেক্ষায় নেই। তারা খুব শিগগিরই লিখিত নিরাপত্তা গ্যারান্টি পেতে যাচ্ছে।
গেল দুই বছর রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন শুধু সামরিক সহায়তা নয়, দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার দাবিও জানিয়েছে। এখন সেই দাবি বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। ইউরোপীয় নেতারা এটিকে ন্যাটোর যৌথ প্রতিরক্ষা কাঠামোর সঙ্গে তুলনা করছেন।
এই বৈঠক শুধু নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ নেই। তাদের বার্তাটা স্পষ্ট- কিয়েভে হামলা মানে শুধু ইউক্রেন নয়, পুরো পশ্চিমা জোটকে চ্যালেঞ্জ করা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ন্যাটো ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিনিধিরা। ইউক্রেন জানাতে চায়- তারা একা নয়। পশ্চিমা জোট এখনো ইউক্রেনের পাশে আছে।
ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, পুতিন ও জেলেনস্কিকে এক টেবিলে বসানোর পথ খোলা রাখা দরকার। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ইঙ্গিতও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সুনির্দিষ্ট শান্তি পরিকল্পনার কথা উল্লেখ না করা হলেও এই প্রস্তাব কিয়েভকে কৌশলগত সুবিধা দিচ্ছে। আলোচনায় রাজি থাকার মানে, সরাসরি আন্তর্জাতিক চাপ মস্কোর মাথায়।
বৈঠকে মানবিক ইস্যুও অগ্রাধিকার পেয়েছে। যুদ্ধবন্দী ও অপহৃত শিশুদের ফেরত আনার প্রসঙ্গে কথা হয়েছে। জেলেনস্কির জন্য এটি কেবল রাজনৈতিক বা সামরিক প্রশ্ন নয়, তার নৈতিক অবস্থানও দৃঢ় করছে। সবশেষ, বৈঠকটি ইউরোপীয় নিরাপত্তা কাঠামোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ন্যাটোর বাইরের দেশগুলোও ইউক্রেনের জন্য লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি। অর্থাৎ, যুদ্ধ আর সীমিত সংঘাত নয় এটি এখন ইউরোপের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার প্রশ্ন। বৈঠকের পর জেলেনস্কির হাসিমুখ জানান দিচ্ছে- শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি, আন্তর্জাতিক ঐক্যের দৃঢ়তা, আলোচনার নতুন পথ আর মানবিক সহায়তার স্পষ্ট বার্তা।