সরকারি চাকরির নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে সরাসরি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে যুক্ত হয়েছেন এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ছয় নম্বর ইউনিয়নের ছয়াশি আহমদ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হান্নান আকন্দ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র উপজেলা কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী পদে মনোনীত হয়েছেন।
গত ১২ জুলাই এনসিপির কেন্দ্রীয় মুখ্যসচিব (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের স্বাক্ষরে মোহনগঞ্জ উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে প্রধান সমন্বয়কারী করা হয় রফিকুল ইসলাম শুভকে, আর যুগ্ম সমন্বয়কারী করা হয় সরকারি শিক্ষক আব্দুল হান্নান আকন্দকে। কমিটিতে আরও ১৫ জন সদস্য রয়েছেন।
তবে সরকারি চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী সরাসরি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন না। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় বলা আছে, “কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না কিংবা রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না।” একই বিধির ২৫(৩) উপধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের সময় কোনো সরকারি কর্মচারী নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।
এ প্রসঙ্গে এনসিপির মোহনগঞ্জ উপজেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রফিকুল ইসলাম শুভ বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক পদে থাকলে তা অনুচিত। আমাদের কমিটিতে আব্দুল হান্নান আকন্দ নামে একজন আছেন ঠিকই, তবে তিনি সরকারি চাকরিতে আছেন কি না, তা আমি জানি না। আপনারা সরাসরি ওনার সঙ্গে কথা বললে ভালো হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক আব্দুল হান্নান আকন্দ বলেন, ‘এটা মূল কমিটি নয়, উপ-কমিটি। এখানে সরকারি কর্মচারী থাকতে কোনো সমস্যা নেই।’
তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন আকন্দ বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকই রাজনৈতিক দলের পদে থাকতে পারেন না। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন ‘একজন শিক্ষক যখন রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হন, তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে কীভাবে?’